<p style="text-align:justify"> </p> <p style="text-align:justify">শুভ মহালয়ায় দেবীর আবাহন শেষে মণ্ডপে মণ্ডপে এখন দেবী বরণের প্রস্তুতি চলছে। মা দুর্গা আসছেন মর্ত্যলোকে। তাই দম ফেলার অবসর নেই প্রতিমা শিল্পী ও আয়োজকদের। রং-তুলির আঁচড় শেষে প্রতিমা মণ্ডপে নেওয়ার অপেক্ষা। উৎসবের দিনগুলোকে নির্বিঘ্ন রাখতে প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসনও। গড়ে তোলা হচ্ছে নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। গত বুধবার শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে দূর্গা পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify"><br /> বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া। শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়। সেদিন কৈলাশের শ্বশুরালয় থেকে সন্তানদের নিয়ে মর্ত্যে আসেন দেবী দুর্গা। মন্দিরে মন্দিরে চণ্ডি পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবী দুর্গার আবাহন। চলে দেবীর চক্ষু দানের প্রস্তুতি। শরৎ আসলেই শিউলি ফুলের মিষ্টি গন্ধে পুরো দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজার হাওয়া বইতে থাকে। মন্দির ও মণ্ডপে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। এই মুহুর্তে দেবী দুর্গার অনিন্দ্য সুন্দর রূপ দিতে প্রতিমা তৈরির কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। </p> <p style="text-align:justify"><br /> সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মতে, প্রতি বছর শরৎকালে দেবী দুর্গা একবার কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসেন। মায়ের আগমনকে কেন্দ্র করে মর্ত্যে ভক্তরা মেতে ওঠেন উৎসবে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো দেশজুড়ে তাই চলছে দেবী বন্দনার প্রস্তুতি। যতই পূজার দিন এগিয়ে আসছে, শিল্পীদের ব্যস্ততা ততটাই বাড়ছে। মন্দিরে কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ-কার্তিক ও অসুরের প্রতিমা। কিছু কিছু মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষে রংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে তুলতে তুলির শেষ আঁচড় দিচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। </p> <p style="text-align:justify"><br /> সেই প্রস্তুতিই সরেজমিন দেখা গেছে রাজধানীর মন্দিরগুলোতে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালীমন্দির, রাজারবাগ কালীমন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরে প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি চলছে সাজসজ্জার কাজও। দম ফেলার ফুসরত নেই প্রতিমা শিল্পীদের। কোনো কোনো প্রতিমায় আবার পরানো হচ্ছে শাড়ি, হাতের বালাসহ অন্যান্য গহনা। পাশাপাশি আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল তৈরি, মণ্ডপ ও তার আশপাশে সাজসজ্জার কাজসহ নানা কাজেও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পূজার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। </p> <p style="text-align:justify"><br /> রমনা কালীমন্দিরের পুরোহিত হরিচাঁদ চক্রবর্তী কালের কণ্ঠকে জানান, গত বুধবার শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে মর্ত্যে দেবী পক্ষের শুরু হয়েছে। আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্টী, ১০ অক্টোবল মহাসপ্তমী, ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী এবং ১২ অক্টোবর মহানবমী পূজা হবে। এরপর ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর পূজা শেষে মা দূর্গা আবারো কৈলশে ফিরে যাবেন। ওইদনি প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ৫ দিনব্যাপী দূর্গোৎসবের সমাপ্তি হবে।</p> <p style="text-align:justify"><br /> পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যানুযায়ী, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে। গত বছর পূজা হয়েছিল ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে। পূজা সামনে রেখে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনগুলো প্রস্তুতিমূলক সভা করেছে। পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখা ও প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরকার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ইতিমধ্যে বৈঠক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও কর্মকর্তাসহ সভায় বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটিসহ বিভিন্ন অংশীজনরা।</p> <p style="text-align:justify"><br /> এ বিষয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর কালের কণ্ঠকে বলেন, ইতোমধ্যে পূজার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। প্রতিমা তৈরি ও সাজসজ্জার পাশাপাশি পূজার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ চলছে। এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ পরিস্থিতির কারণে মন্দির ও মণ্ডপের পক্ষ থেকেও নিজস্ব নিরাপত্তার প্রস্তুতি রাখতে সারাদেশে পূজার আয়োজকদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।</p>