<p>৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৬০ শয্যার বরিশাল ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগের বিশেষায়িত হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। হাসপাতালটির নির্মাণের খবর আশা জাগিয়েছিল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মাঝে। ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। তবে এখনো শেষ হয়নি হাসপাতালের নির্মাণকাজ। এক বছর আগে শেষ হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদও। কিন্তু এই সময়ে মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ শেষ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।</p> <p>বরিশাল গণপূর্ত বিভাগ জানায়, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ধীরগতি। প্রকল্পের মেয়াদ আরো দুই বছর বাড়ানোর পাশাপাশি অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।</p> <p>ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান বিল্ডার্সের ম্যানেজার রিপন তালুকদার বলেন, ২০২০ সালে তিন একর জমিতে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শুরু করে তাঁদের প্রতিষ্ঠান। ১৭তলা ভবন ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও বরাদ্দ না পাওয়াসহ নানা সীমাবদ্ধতায় চুক্তি অনুযায়ী কাজ শেষ করতে পারেননি তাঁরা। তিনি আরো বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় তা হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী কাজের প্রায় অর্ধেক শেষ করেও এখন পর্যন্ত তাঁরা বিল পেয়েছেন মাত্র ২৫ শতাংশের। সরকারের কাছে এখনো ২০ কোটি টাকা বিল পাওনা রয়েছে তাঁদের। বিল না পেলে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।</p> <p>বরিশাল গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়সাল আলম বলেন, নতুন করে প্রকল্পের ব্যয় বাড়েনি। তবে সরকারি প্রকল্পটি সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। ঠিকাদার এ পর্যন্ত যে কাজ করেছে তার বিল এখনো পরিশোধ করা যায়নি। এখনো তারা ১৬ কোটি টাকা পাবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ হতে এখনো দুই বছর সময় লাগবে।</p> <p>তাই চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পরই নতুন করে দুই বছর সময় বাড়ানোর জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। যদিও এখনো মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন হয়নি। তবে শিগগিরই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধ করাও সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।</p> <p>বরিশাল স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক রফিকুল আলম বলেন, ‘এ অঞ্চলের চিকিৎসাব্যবস্থা সহজ ও যুগোপযোগী করে তুলতে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি। আমরা চাই এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন হোক। এটা থমকে গেলে আমাদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হবে।’</p> <p>দেশের বিভিন্ন বিভাগে আটটি সমন্বিত বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্প গৃহীত হয়েছিল। এর মধ্যে বরিশাল একটি। হাসপাতালটির ছয়তলা পর্যন্ত ১০০ শয্যার ইউনিট থাকবে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য। বাকিগুলোতে কিডনি, হৃদরোগসহ অন্যান্য বিভাগ থাকবে।</p> <p> </p>