<p>বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে সিলেটে গুলিবিদ্ধ হন চাঁদপুরের আকবর হোসেন। সিলেট মদন মোহন কলেজের এই ছাত্রের বুক, পিঠ ও হাতে গুলি লাগে। এতে প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর আহত হন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে চিকিত্সা চলছে। কিন্তু অর্থাভাবে উন্নত চিকিত্সা হচ্ছে না তাঁর। অসুস্থতা নিয়ে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে অবস্থান করতে হচ্ছে আকবর হোসেনকে।</p> <p>সিলেট মদন মোহন সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকবর হোসেন। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা গ্রামের দিনমজুর প্রতিবন্ধী রওশন আলী-ফেরদৌসী বেগম দম্পতির ছেলে তিনি। গুলির ক্ষত নিয়ে বাড়িতে বিছানায় পড়ে থাকলেও প্রতিবন্ধী বাবা ছেলের চিকিত্সা না করাতে পেরে দুশ্চিন্তায় আছেন।</p> <p>রওশন আলী বলেন, ‘ছেলে বুকে, পিঠে ও হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। পুরো শরীরজুড়ে রয়েছে ছররা গুলির ক্ষতবিক্ষতের চিহ্ন। এর মধ্যে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ছেলের কোনোমতে চিকিত্সা করালেও পুরোপুরি সুস্থ করে তুলতে পারিনি। অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর চিকিত্সার ব্যয় বহন করলেও আমার ছেলের বেলায় তা জোটেনি।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘আমি একসময় প্রবাসে ছিলাম। সেখানে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আমার হাত কেটে ফেলতে হয়েছে। বর্তমানে দিনমজুরি করে পরিবার নিয়ে কোনো মতে বেঁচে আছি। এখন আবার ছেলের এই অবস্থা। ছেলের চিকিত্সা ব্যয় মেটাতে না পেরে এখন মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে আমাকে।’</p> <p>আহত আকবর হোসেনের মা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘ছেলে মেধাবী। তার শরীর থেকে ছররা গুলির ছোট ছোট কার্তুজ উঠিয়েছি। সেই গুলি আমার কাছে রয়েছে। ছেলের সুস্থতা ও ভবিষ্যত্ উজ্জ্বল হোক এটাই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আকুতি।’ আহত আকবর হোসেন বলেন, ‘গুলি লাগার পর প্রথমে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে। পরে উন্নত চিকিত্সার জন্য বলা হলেও টাকার অভাবে চিকিত্সা নিতে পারছি না। জীবনে কিছু পাই বা না পাই, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আছি এবং আগামী দিনেও থাকব। কারণ আমিও একজন ছাত্র। আমি লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটি চাকরি করে মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাতে চাই।’</p>