<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খুলনা সিটি করপোরেশনে (কেসিসি) প্রশাসক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার। কেসিসির সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ মহানগর শাখার সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক কোথায় আছেন, তা কেউ জানে না। কাউন্সিলরদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিধায় সবাই আত্মগোপনে আছেন। জনপ্রতিনিধি না থাকায় নাগরিকরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশেষত চলমান রাস্তা ও ড্রেন সংস্কারের কার্যক্রমগুলো স্থবির হয়ে আছে। জন্ম সনদ, মৃত্যু নিবন্ধন ও নাগরিক সনদ দেওয়ার কার্যক্রমও বন্ধ। মানুষের নানা প্রয়োজনে নাগরিক সনদ প্রয়োজন হয়; তেমনি প্রয়োজন হয় জন্ম ও মৃত্যু সনদ। উত্তরাধিকার নিশ্চিতকরণ, চাকরি, পাসপোর্ট প্রভৃতিতে কাউন্সিলরের সনদপত্র প্রয়োজন হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে কেসিসিতে প্রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে জয়ী মেয়র, কাউন্সিলরা কেউই অফিস করছেন না। পালাবদলের ওই সময়ে ক্ষুব্ধ জনতা বেশ কিছু কাউন্সিলের অফিস পুড়িয়ে দেয় এবং ভাঙচুর করে। নতুন প্রশাসক নগর অফিস সচল করলেও কাউন্সিলরদের জন্য নির্দিষ্ট কার্যক্রমে গতি নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেসিসির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাকসুদুর রহমান জানান, ভিসা আবেদনের জন্য তাঁর নাগরিক সনদ প্রয়োজন; কিন্তু কাউন্সিলর অফিস না করায় তা সংগ্রহ করতে পারছেন না। রফিকুল ইসলাম নামের একজন ঘুরছেন তাঁর পরিবারের একজনের মৃত্যু সনদ সংগ্রহের জন্য। এ রকম সমস্যা সব ওয়ার্ডেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নগরের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো আওয়ামী লীগপন্থী ঠিকাদাররা বাস্তবায়ন করছিলেন; তাঁরা আত্মগোপন করায় এই কাজগুলোও একেবারে বন্ধ। প্রসঙ্গত, নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে ৮২৩ কোটি টাকার প্রকল্প এবং শহরের রাস্তা সংস্কারের জন্য ৬০৭ কোটি টাকার প্রকল্প শুরু হয়েছিল। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেসিসি সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সমর্থক ঠিকাদারদের পাশাপাশি বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ মেয়র খালেক নিজেই বাস্তবায়ন করছিলেন। কিছু কাজ কাউন্সিলররা অন্যদের দিয়ে করছিলেন। কেসিসির ৩১টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে অন্তত ২৩ জন এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে। তাঁরা সবাই এখন কাজ ফেলে আত্মগোপনে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল মোতালেব বলেন, এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য চারটি বড় ড্রেনের সংস্কারৎ কাজ বন্ধ রয়েছে। এগুলো কবে সম্পন্ন হবে তা কেউ জানে না। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, জোড়াকল বাজার থেকে রূপসা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার কংক্রিটের রাস্তা অর্ধেকটা পড়ে আছে, তাই চলাচলে সীমাহীন ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেসিসি সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত ড্রেনেজ ও সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রায় ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে দ্রুত কাজ শুরু করা না গেলে প্রকল্পগুলো বিলম্বিত হতে পারে। অন্যান্য থমকে যাওয়া বড় প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা সংস্কার, শলুয়া এলাকায় বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ এবং খালিশপুরে চিত্রালী মার্কেট নির্মাণ। এসব প্রকল্পে বরাদ্দ প্রায় ৪৬৮ কোটি টাকা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কমপক্ষে ১২টি উন্নয়নকাজ বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তাঁর কাজগুলো যিনি তদারক করছিলেন, তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাউন্সিলরের অফিস ও বাসভবন ভাঙচুর করা হয়েছে। এখন স্থানীয়রা আমাকেও হুমকি দিচ্ছে। সব সময় ভয়ে ভয়ে কাটাই, কিভাবে কাজ করব?</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সচেতন নাগরিক কমিটি খুলনার সাবেক সভাপতি আয়োরুল কাদির কালের কণ্ঠকে বলেন, কেসিসির বর্তমান কর্তৃপক্ষকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই অচলাবস্থা নিরসনে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে নাগরিকদের ভোগান্তি দীর্ঘায়িত হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাজ শুরুর বিষয়ে কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান জানান, এরই মধ্যে ১১টি প্রকল্প সাইটে কাজ শুরু হয়েছে। বাকি কাজগুলোও শুরু করার প্রস্তুতি চলছে।</span></span></span></span></p>