<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের দেশে সাধারণত শীতকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ কমে আসে। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় মশার প্রজনন কম হয়। তবে এ বছর পরিস্থিতি ব্যতিক্রম হতে পারে। আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থানে ব্রুটো ইনডেক্স এখনো ২০-এর ওপরে রয়ে গেছে, যা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। এডিস মশার ঘনত্ব এমন থাকলে ডিসেম্বরে শীতের মধ্যেও ডেঙ্গুর সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে না। তবে জানুয়ারির মাঝামাঝি ডেঙ্গুর প্রকোপ কমতে পারে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বে উষ্ণ আর্দ্রীয় অঞ্চলের অনেক দেশে ডেঙ্গু রোগী আছে। সংখ্যার বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি রোগী ব্রাজিলে।  কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সত্য, ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে। গত বছর মৃত্যুহার ছিল ০.৫৩, যা এ বছর কিছুটা কমে এলেও তা অনেক বেশি মাত্রায় রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বছর শীতেও ডেঙ্গু কেন বেশি থাকবে এবং তার বিজ্ঞানভিত্তিক কারণই বা কি? এ থেকে বাঁচার উপায় কী? কিভাবে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে? এ রকম নানা প্রশ্ন সাধারণ নাগরিক এবং মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বর্তমানে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে ডেঙ্গু রোগের ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা তার প্রজনন এবং বসবাসের জন্য নতুন নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হচ্ছে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা বাড়ার সঙ্গে এডিস মশার বংশ বৃদ্ধি এবং ডেঙ্গুর সংক্রমণও বাড়ছে। যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে ডেঙ্গুর সরাসরি সম্পর্ক নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা এখন পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি, তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, করোনাভাইরাসের মতো ডেঙ্গুভাইরাসও পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডেঙ্গুর প্রকোপ কম বা বেশি হওয়ার পেছনে জনসাধারণের সচেতনতা, এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে তাদের সহযোগিতা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থানে ব্রুটো ইনডেক্স এখনো ২০-এর ওপরে রয়ে গেছে। এডিস মশার ঘনত্ব এমনই থাকলে ডিসেম্বরে শীতের মাঝেও ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে না। যদি আর বৃষ্টি না হয়, তাহলে হয়তো এডিস মশা কিছু জায়গায় সীমাবদ্ধ হবে, যেখানে বৃষ্টি ছাড়াই পানি জমা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাঠ পর্যায়ে আমাদের গবেষণাদলের কাজের ফলাফল থেকে যা দেখছি, নির্মীয়মাণ ভবনের বেইসমেন্টে জমা পানি, যেসব এলাকায় পানির সংকট আছে, তাদের টয়লেট এবং গোসলখানায় ড্রাম ও বালতিতে জমিয়ে রাখা পানি, বাড়ির ওয়াসার মিটার সংরক্ষণের জন্য নির্মিত চৌবাচ্চায় জমা পানি এবং বহুতল ভবনের বেইসমেন্টে গাড়ির পার্কিংয়ে গাড়ি ধোয়ার জায়গায় জমা পানি শীতকালে এডিস মশা প্রজননের জন্য অতি জুতসই স্থান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শীতের সময় বৃষ্টি না থাকার কারণে রাস্তাঘাট উন্মুক্ত স্থানে যে ছোট-বড় পাত্র পড়ে থাকে, সেখানে পানি না জমার কারণে মা মশা খুঁজে খুঁজে সেসব স্থানে ডিম পাড়বে, যেখানে পানি জমার জন্য বৃষ্টির প্রয়োজন হয় না। এ ক্ষেত্রে তারা ড্রেন বা বদ্ধ যেকোনো পানি ডিম পাড়া বা তার প্রজননের জন্য ব্যবহার করতে পারে। তাই শীতকালে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ প্রগ্রামকে এসব প্রজননস্থলগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বাস করি, সিটি করপোরেশন, স্থানীয় প্রশাসন এবং নগরবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি টেকসই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ডেঙ্গু সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান হতে পারে, যা শুধু ডেঙ্গু নয়, অন্যান্য মশাবাহিত রোগের প্রতিরোধেও কার্যকর হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : কীটতত্ত্ববিদ, গবেষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইমেইল :</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""> professorkabirul¦gmail.com</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>