<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কয়েক বছর ধরে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুর মৌসুম দীর্ঘ হচ্ছে। এবার নভেম্বর মাসেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে বছরের প্রায় ৩২ শতাংশ রোগী। আগের বছর এই সময় আক্রান্ত হয়েছিল ১২.৬৭ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় রোগী বেড়েছে  আড়াই গুণ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর সংক্রমণ চূড়ায় উঠে যায়। গত বছর জুলাই থেকে অক্টোবরে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে ২০১৬ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সারা বছর রোগী পাওয়া যাচ্ছে।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯০ হাজার ৯৭৭ জন। এর মধ্যে নভেম্বরের ২৯ দিনে ভর্তি ২৮ হাজার ৯৭৭ জন, যা মোট রোগীর ৩১.৯১ শতাংশ। আগের বছর একই সময়ে আক্রান্ত হয় ৪০ হাজার ৭১৬ জন, যা মোট রোগীর ১২.৬৭ শতাংশ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে সারা বছর ডেঙ্গু রোগী পাওয়া গেলেও মে থেকে সেপ্টেম্বর মাসকে ধরা হয় ডেঙ্গুর প্রকোপের মৌসুম। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতকাল হওয়ায় এই সময় রোগী থাকে খুব কম।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার কালের কণ্ঠকে বলেন, ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা ও ভাইরাস দুটিই সারা বছর থাকছে। এ কারণে বছরের কোনো মাসই ডেঙ্গুমুক্ত থাকছে না। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এবার ডিসেম্বরে শীতের মধ্যেও ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে। তবে জানুয়ারির মাঝামাঝি সংক্রমণ কমে আসার পাশাপাশি মৃত্যুও কমে আসবে। আমাদের ধারণা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা তার প্রজনন এবং বসবাসের জন্য নতুন নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৫৪ জন। নতুন ভর্তি রোগীদের নিয়ে চলতি বছর এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০ হাজার ৭৯৪ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু ৪৮৫ জনের। দেশের ইতিহাসে মৃত্যুর এ সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা। এই বয়সে আক্রান্ত ৩৮ হাজার ২৭৬ জন, যা মোট আক্রান্তের ৪২ শতাংশ। মৃত্যু সবচেয়ে বেশি ২১ থেকে ৪০ বছর বয়সীদের মধ্যে। এই বয়সে মারা গেছে ১৭৩ জন, যা মোট মৃত্যুর ৩৬ শতাংশ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে ৮৭ হাজার ২৮১ জন রোগী। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বছর মোট ভর্তি রোগীর মধ্যে ৫৪ হাজার ৪৬৬ জন ঢাকার বাইরের রোগী। এদের মধ্যে মৃত্যু ১৭৬ জনের। ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৬ হাজার ৩২৮ জন, মৃত্যু ৩০৯ জনের। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকার বাইরে আক্রান্ত ৬০ শতাংশ, মৃত্যু ৩৬ শতাংশ।  ঢাকায় আক্রান্ত ৪০ শতাংশ ও মৃত্যু ৬৪ শতাংশ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মৃত্যুহারে শীর্ষে বাংলাদেশ</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বছর বিশ্বব্যাপী এক কোটি ৪০ লাখের বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল। তবে মৃত্যুহারে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। ব্রাজিলের তুলনায় বাংলাদেশে মৃত্যুহার ৯ গুণ বেশি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), প্যান আমেরিকান স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোলের (ইসিডিসি) ও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুর পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্রাজিলে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৯৯ লাখ ২৮ হাজার ১৬৯ জন, মৃত্যু পাঁচ হাজার ৮১৫ জনের।//// মৃত্যুহার ০.০৫৯ শতাংশ। অর্থাৎ এক হাজার ৭০৭ রোগী মধ্যে মৃত্যু একজনের। সরকারের হিসাব বলছে, বাংলাদেশে মৃত্যুহার ০.৫ শতাংশ। অর্থাৎ ১৮৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলে তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইসিডিসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে বরাবরের মতো এ বছরও ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছে এমন ১০টি দেশের মধ্যে সাতটিই দক্ষিণ আমেরিকার। এর মধ্যে রয়েছে ব্রাজিল, পেরু, প্যারাগুয়ে, বলিভিয়া, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো ও কলম্বিয়া।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক ও জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন বলেন, গ্রামাঞ্চলে কাঠামো রয়েছে, কিন্তু সরঞ্জাম ও জনবল নেই। শহরাঞ্চলে সরঞ্জাম ও জনবল বড় বড় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে আবার কোনো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো নেই। এই চক্করে পড়ে ডেঙ্গুর মতো জনস্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ রোগীগুলো সেবাবঞ্চিত হচ্ছে এবং মৃত্যুবরণ করছে। বিশেষ করে দরিদ্র মানুষ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, হাসপাতালে গাইডলাইন মেনে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে কি না, এর তদারকি হচ্ছে কি না, যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। রোগীর ভিড় হাসপাতালের মেঝেতে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে, কিন্তু বিকেন্দ্রীকরণ করা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে করণীয় হলো বিকেন্দ্রীকরণ চিকিৎসাব্যবস্থার মধ্যে স্তরভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা। তাহলে মৃত্যু কমবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংক্রমণে শীর্ষ দেশগুলোর পরিস্থিতি </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্রাজিলের পর দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি। ইসিডিসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এ বছর পাঁচ লাখ ৮০ হাজার ২০০ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে মারা গেছে ৪০৮ জন। মৃত্যুহার ০.০৭ শতাংশ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মেক্সিকোতে পাঁচ লাখ দুই হাজার ৭২৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে মারা গেছে ২৬২ জন। দেশটিতে মৃত্যুহার ০.০৫ শতাংশ।  কলম্বিয়ায় তিন লাখ এক হাজার ৪২২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে মারা গেছে ১৯৮ জন। দেশটিতে মৃত্যুহার ০.০৬ শতাংশ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেরুতে মৃত্যুর সংখ্যা কলম্বিয়ার চেয়ে বেশি। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত দুই লাখ ৭৩ হাজার ৮৪৭ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে মারা গেছে ২৫২ জন। দেশটিতে মৃত্যুহার ০.০৯ শতাংশ। প্যারাগুয়েতে দুই লাখ ৯১ হাজার ৮২২ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে মারা গেছে ১২৮ জন। দেশটিতে মৃত্যুহার ০.০৪ শতাংশ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>