<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা গত কয়েক মাসে কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন। গুলশানের বাসায় চিকিৎসকদের পরামর্শে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। তবে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নিতে বিমানভ্রমণের ধকল সহ্য করার মতো তাঁকে শারীরিকভাবে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফিট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মনে করছেন না চিকিৎসকরা। খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়মিতভাবে তত্ত্বাবধান করেন যে কয়েকজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক, তাঁদের একজন অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, চেয়ারপারসনের অবস্থা আগের মতোই আছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার এমন কোনো পরিবর্তন হয়নি যে তাঁকে সুস্থ বলা যায়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগেও ডা. জাহিদ বলেছিলেন, খালেদা জিয়া কারো সাহায্য ছাড়া চলাফেরা বা নিজের কোনো কাজই করতে পারেন না।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিকিৎসকরা বলছেন, ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চোখের প্রদাহ, হৃদরোগ, লিভার, কিডনিসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খালেদা জিয়া সাড়ে চার বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে অন্তত ৪৮৫ দিন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে বারবার তাঁকে বিদেশ নেওয়ার আবেদন জানালেও তাতে অনুমতি মেলেনি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাজা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পেয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরো সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখনো পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে ছিলেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিএনপি বরাবরই বলে আসছে, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মিথ্যা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মামলায় তাদের নেত্রীকে কারাবন্দি করা হয়েছে রাজনীতি থেকে বিদায় করার জন্য।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ২০২০ সালে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। ওই বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া। তখন থেকে তিনি সেখানেই আছেন। এর পর থেকে পরিবারের আবেদনে ছয় মাস পর পর বিএনপি নেত্রীর মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে আসছিল শেখ হাসিনার সরকার। প্রতিবারই তাঁকে দুটি শর্ত দেওয়া হচ্ছিল। তাঁকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অত্যাচারে খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। একটি সরকার কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ ও নিপীড়নমূলক হলে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীকে উপযুক্ত চিকিৎসায় বাধা দিতে পারে, তা জাতি দেখেছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখন কিভাবে চলছে চিকিৎসা?</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. জাহিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড নিবিড়ভাবে খালেদা জিয়াকে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। প্রতিনিয়ত চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক অবস্থা স্বচক্ষে পর্যবেক্ষণ করেন। প্রয়োজন অনুযায়ী তাঁর ওষুধের মাত্রা বাড়ানো-কমানো হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁর একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের মূল সমস্যা হার্ট ও লিভারে। তবে হৃদযন্ত্রে পেসমেকার এবং লিভারে অস্ত্রোপচারের পর তিনি আগের চেয়ে ভালো বোধ করছেন। নানা জটিল রোগ ও অস্ত্রোপচারের কারণে মাঝেমধ্যে শরীরে কিছু নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়।   </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দলীয় সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়াকে গত সোমবার হাসপাতালে নেওয়ার কথা ছিল। পরে চিকিৎসকরা তাঁকে কিছুক্ষণ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। তবে কয়েক দিনের মধ্যে তাঁর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আবার হাসপাতালে নেওয়া হতে পারে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিদেশ যাচ্ছেন কবে?</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাচ্ছেন কবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারেনি। দলের জ্যেষ্ঠ নেতা এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁকে লন্ডন নিতে চান। সেখান থেকে প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্য দেশে নেওয়ার পরিকল্পনা আছে। কিন্তু এত দূরের পথ কিভাবে তিনি বিমানে ভ্রমণ করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে চিকিৎসকদের। এ জন্য আপাতত বিদেশ নেওয়ার বিষয়টিকে পাশ কাটানোর চিন্তা করা হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি এই বিষয়ে তাঁর আরেকজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মো. মামুনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, বিদেশ নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু সে বিষয়েও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ প্রসঙ্গে ডা. জাহিদ এই প্রতিবেদককে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদেশ নেওয়ার উদ্যোগ আছে। শারীরিকভাবে সুস্থ ও ভ্রমণ করার মতো ফিট মনে হলে তাঁকে বিদেশে নেওয়া হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. জাহিদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কথা আসবে, আপনারা উনাকে বাইরে নিচ্ছেন না কেন? একজনকে বাইরে নিতে হলে শারীরিক সুস্থতা প্রয়োজন, বিমানে উঠতে হলে নেগেটিভ প্রেসার সহ্য করার মতো সুস্থতা থাকতে হয়। ল্যান্ড করার সময়ে কতটুকু উনি সহ্য করতে পারবেন, সেটি গল্পের বিষয় নয়, সেটি একাডেমিক, প্রফেশনাল ও সায়েন্টিফিক বিষয়। মেডিক্যাল বোর্ড এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করছে। শারীরিকভাবে তিনি একটু সুস্থ হলেই তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব উন্নত সেন্টারে ফলোআপের জন্য বাইরে নেওয়া হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেভাবে সময় কাটছে</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কয়েক মাস আগে ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান দেশে এসেছেন। মূলত তিনি শাশুড়িকে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছেন। গুলশানের বাড়িতে আপাতত খালেদা জিয়ার দেখভাল তাঁরাই করছেন। আপাতত খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়া সম্ভব না হলে সপ্তাহখানেক পর তিনি লন্ডন ফিরে যেতে পারেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলাম, ভাই শামীম এস্কান্দার, তাঁর স্ত্রীসহ নিকটাত্মীয়রা প্রায়ই আসেন বাড়িতে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে তাঁর সময় কাটে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া ৫ আগস্টের পর দলের নেতাকর্মীরাও ওই বাড়িতে যাচ্ছেন আগের চেয়ে বেশি। দলীয় কার্যক্রম নিয়ে তিনি খুব বেশি নিজেকে সম্পৃক্ত করেন না, তবে দেশের সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন নেতাদের সঙ্গে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে নির্বাচনের পর প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তারপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসেন। তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে খালেদা জিয়া ব্যাপক উন্নয়ন করেন। গণতান্ত্রিক সরকারের সময় ১৯৯১ সালে তিনি উন্নয়নের যে ধারা শুরু করেছিলেন সেই পথ ধরে পরবর্তী সময়ে দেশ এগিয়েছে। </span></span></span></span></span></p>