<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে দেশে যেভাবে ঢালাওভাবে মামলা করা হচ্ছে, এসব মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করলে যে কেউ বুঝতে পারবে, এগুলো মিথ্যা মামলা। একটি খুনের ঘটনায় করা মামলায় ১৫ থেকে ২০ জন আওয়ামী লীগ নেতা-নেত্রী, মন্ত্রী, আরো ডজন ডজন অজ্ঞাতপরিচয় আসামি। এগুলো দেখলেই বোঝা যায়, আসল ঘটনার সঙ্গে এসব মামলার সংশ্লিষ্টতা নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও একইভাবে জ্ঞাত-অজ্ঞাত অনেককে আসামি করে মামলা করা হতো। এখনো একই প্রক্রিয়ায় মামলা হচ্ছে। এর দুটি কারণ। প্রথমত, অনেক লোককে আসামি করলে একটি ভয়ভীতির পরিবেশ গড়ে ওঠে। দ্বিতীয়ত, এর থেকে আর্থিক সুবিধা আদায় করা যায়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আগে যে পুলিশ মামলা করত, এখনো তো সে পুলিশই মামলা করছে। পুলিশ তো আর নতুন হয়নি। এভাবে মামলা করতে করতে পুলিশের স্বভাবে পরিণত হয়েছে। অর্থাৎ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা পুলিশের মজ্জাগত স্বভাবে পরিণত হয়েছে। এখনো পুরনো প্রক্রিয়া থেকে পুলিশ বের হতে পারছে না, বের হতে পারাও মুশকিল। এর জন্য পুলিশের নতুন করে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, পুরনো প্রক্রিয়ার বাইরে নতুন করে কিভাবে মামলা লিখতে হবে, অনেকে সেটা জানে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মামলা হলেই মানুষকে হয়রানি করা যায়। অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নেওয়া যায়। এই রাস্তাটা বন্ধ করতে হবে। সরকারকে এর বাইরে গিয়ে দৃঢ় হতে হবে। যারা মিথ্যা মামলা দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করলে মামলাকারীকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যাতে করে কেউ আর মিথ্যা মামলা না করে। আর বর্তমানে যেসব মামলা দেওয়া হচ্ছে, এসব মামলার অভিযুক্তদের কাউকে দোষী প্রমাণ করা অসম্ভব হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবার মামলার মেরিট না থাকলেও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর সাধারণত এক দুই বছরের আগে জামিন হয় না। তারপর বছরের পর বছর এই মামলা তদন্তে থাকবে, ডেট পড়বে, এভাবেই চলতে থাকবে। এভাবেই হাজার হাজার মামলা চলছে। বছরের পর বছর গেলেও তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমান এই পরিস্থিতিতে আমাদের পুরনো মামলার প্রক্রিয়া থেকে বের হয়ে আসা উচিত। তদন্তে যাদের অপরাধী হিসেবে প্রমাণ করা যাবে, তাদের নাম উল্লেখ করেই মামলা হওয়া উচিত। এর জন্য সরকারকেই বিকল্প পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হবে। এখন যা হচ্ছে এগুলো মামলা না। সম্পূর্ণ হয়রানির উদ্দেশ্যে এসব মামলা করা হচ্ছে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী</span></span></span></span></p>