<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গ্রীষ্মে বাংলাদেশের প্রকৃতিতে হাজারো ফুল ফোটে। কৃষ্ণচূড়া, সোনালুসহ নাম না জানা অসংখ্য ফুলের সমারোহ দেখা যায়। এত সব ফুলের মধ্যে আলাদা করে নজর কাড়ে জারুল ফুল। গ্রামগঞ্জে, পুকুরপার, হাওরসংলগ্ন গ্রামে প্রচুর জারুলগাছ দেখা যেত একসময়। তবে এখন আর সেই প্রাচুর্য নেই। তার পরও প্রকৃতি থেকে জারুল একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। সুযোগ পেলেই তার সৌন্দর্য অপার মহিমায় বিকশিত হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জারুলের বৈজ্ঞানিক নাম লিরগার্সট্রোমিয়া স্পোসিওসা (</span></span><em><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Lagerstroemia speciosa</span></span></em><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">)</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। এর আদি নিবাস শ্রীলঙ্কায়। তবে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনেও প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়। জারুলগাছের ফুল সাধারণত বেগুনি, সাদা বা গোলাপি হয় এবং এটি গাছের শাখায় ঝুলে থাকে। প্রতিটি ফুলের পাপড়ি কোমল এবং সুঘ্রাণযুক্ত। মে থেকে জুলাই মাসে ফোটে জারুল ফুল। গাছটির কাঠ শক্ত, নানা ধরনের কাঠামোগত কাজে এটি ব্যবহৃত হয়। বাড়ির আসবাবপত্র, লাঠি, শৌখিন পণ্য এবং নিত্য দরকারি উপকরণ তৈরিতে জারুল কাঠের কদর আছে। এই কাঠ কিছুটা লালচে রঙের। গ্রামে ও উপকূল এলাকায় নৌকা, গরুর গাড়ি, চাষের যন্ত্রপাতি তৈরিতেও জারুল কাঠ ব্যবহৃত হয়। জারুলের উপকারিতা শুধু সৌন্দর্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর চিকিৎসাগত গুণও অনেক। জারুলের ফুল, পাতা এবং ছাল চিকিৎসা শাস্ত্রে বেশ কাজে আসে। এতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ, যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। বিশেষত, জারুলের ফুলের নির্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী। তা ছাড়া এই গাছের বিভিন্ন অংশ স্নায়ু ও পেশির ব্যথা উপশমে ব্যবহৃত হয়। জারুলের পরিবেশগত গুরুত্বও অনেক। শহরের রাস্তায়, পার্কে এবং খোলা মাঠে এই গাছ রোপণ করা হলে তা শহরের বাতাসের গুণগত মান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এটি মাটি ক্ষয়ের বিরুদ্ধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এর লতানো শাখা, প্রশস্ত পাতা এবং বড় বড় ফুলের ঝুঁটি ঘরবাড়ির পাশে কিংবা সড়কের ধারে রোপণ করা হলে তা পরিবেশকে সজীব এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলে। গ্রীষ্মে আমাদের যখন হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হয় তখন জারুলের ছায়া যেন মনে হয় এক টুকরো রঙিন হিমেল হাওয়া।</span></span></span></span></p> <p> </p>