<p>বর্তমানে সামরিক জান্তা পরিচালিত পশ্চিম আফ্রিকার তিনটি দেশ ভবিষ্যতে নতুন বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট চালু করবে। বৃহত্তর আঞ্চলিক গোষ্ঠী ইকোওয়াস থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ কার্যকর হবে।</p> <p>মালি, বুরকিনা ফাসো ও নাইজারের সামরিক নেতারা ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে একাধিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। এরপর গত জানুয়ারিতে তারা ইকোওয়াস ত্যাগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন।</p> <p>অভ্যুত্থানের পর পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো জান্তা সরকারগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যাতে তারা দ্রুত বেসামরিক শাসন পুনঃস্থাপন করতে বাধ্য হয়। কিন্তু বর্তমানে সাহেল রাষ্ট্রের জোট গঠন করা তিনটি দেশ এখনো সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি এবং নিজেদের জোটকে শক্তিশালী করার পথ বেছে নিয়েছে।</p> <p>মালির জান্তা নেতা কর্নেল আসিমি গোইতা স্থানীয় সময় রবিবার রাতে একটি টেলিভিশন ভাষণে বলেন, ‘আগামী দিনগুলোতে (জোটের) একটি নতুন বায়োমেট্রিক পাসপোর্টের প্রচলন করা হবে, যার লক্ষ্য আমাদের সর্বজনীন অঞ্চলে ভ্রমণ নথিগুলোকে একীভূত করা।’ </p> <p>সামরিক সরকারগুলো তাদের নিজস্ব জোট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রথম বার্ষিকী উদযাপন করতে যাওয়ার এক দিন আগে সাহেল জোটের কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট কর্নেল গোইতা এই ঘোষণা দিলেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, একটি যৌথ পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনাও করছেন তারা, যা তাদের তিন দেশে ‘তথ্যের সমন্বিত প্রচার’ নিশ্চিত করবে।</p> <p>এর আগে বুর্কিনা ফাসো ইকোওয়াসের লোগো ছাড়াই একটি নতুন বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল। তবে এখনো পরিষ্কার নয়, এই নতুন পাসপোর্ট তাদের নাগরিকদের ইকোওয়াসের অন্য সদস্য দেশগুলোতে ভ্রমণের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, যেখানে তারা ১৫ জাতির আঞ্চলিক পাসপোর্টধারী হিসেবে ভিসামুক্ত চলাচলের সুবিধা ভোগ করত।</p> <p>গত জুলাই মাসে জান্তা নেতারা ঘোষণা করেছিলেন, তারা ‘অপরিবর্তনীয়ভাবে’ ইকোওয়াসকে ছেড়ে যাচ্ছেন। তারা বলেছিলেন, সার্বভৌম জনগণের সম্প্রদায় গঠন করতে চান তারা, যা আফ্রিকান মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে এবং ‘বিদেশি শক্তির নিয়ন্ত্রণ থেকে দূরে’ থাকবে।</p> <p>সর্বশেষ এই ঘোষণা এমন সময় এলো, যখন ইকোওয়াস তিনটি সাহেল দেশকে আবার জোটে ফেরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এই তিনটি দেশ গত বছর সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য সাহেল জোট গঠন করেছিল। জুলাই মাসে তারা একটি কনফেডারেশন তৈরি করে, যাতে নিরাপত্তার বাইরেও তাদের কাজের পরিধি বাড়ানো যায়।</p> <p>সাহেল অঞ্চলে কয়েক দশক ধরে জিহাদি সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। এতে আনুমানিক হাজার হাজার মানুষকে নিহত এবং লক্ষাধিক মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে। এই বিদ্রোহ দমনের চেষ্টাকেই সামরিক নেতাদের ক্ষমতা দখলের একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও তারা এখনো সহিংসতা দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে সামরিক নেতৃত্বাধীন এই তিনটি দেশ তাদের অঞ্চলে জিহাদি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করা ফরাসি সেনাদের বহিষ্কার করেছে এবং সামরিক সহায়তার জন্য রাশিয়ার দিকে ঝুঁকেছে।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>