<p>জার্মানির পূর্বাঞ্চলের দুই রাজ্য—স্যাক্সনি ও টুরিঙ্গিয়ায় রবিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অভিবাসনবিরোধী এএফডি দল দুটি রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে বলে জরিপ বলছে। তাই অধিকাংশ অভিবাসী উদ্বিগ্ন।</p> <p>টুরিঙ্গিয়া শরণার্থী পরিষদে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন সিরিয়ায় জন্মগ্রহণ করা নুর আর জুবি। ছয় বছর ধরে তিনি রাজ্যের গেরা শহরে বাস করছেন। প্রায় প্রতিদিন বর্ণবাদের শিকার হতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি জানি কিভাবে এর সঙ্গে লড়তে হয়।’</p> <p>তাই রবিবারের নির্বাচনে এএফডি সবচেয়ে বেশি ভোট পেলেও অন্য শহরে চলে যেতে চান না জুবি। তিনি জানান, টুরিঙ্গিয়া তার বাড়ি। সম্প্রতি ট্রেনে ভ্রমণের সময় একজনের কাছ থেকে বর্ণবাদের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, সেই সময় দুজন জার্মান যাত্রী তাকে সমর্থনও করেছিলেন। তাই জুবি বলেন, ‘এএফডি ভোটারের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের স্বাগত জানানো জার্মানদের সংখ্যাও বাড়ছে।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, এএফডি জিতলে রাজ্য ছেড়ে যেতে চান—এমন কিছু মানুষকে চেনেন তিনি। আর এমন কিছু মানুষ আছেন যারা চলে যেতে চাইলেও তাদের পক্ষে সেটি সম্ভব নয়। কারণ, আইনের কারণে শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের অন্তত তিন বছর টুরিঙ্গিয়াতে থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।</p> <p>টুরিঙ্গিয়া রাজ্যে কয়েক বছর ধরে অভিবাসীদের প্রতিকূল পরিবেশের শিকার হতে হচ্ছে। সম্প্রতি আরেক রাজ্যে অবস্থিত জোলিঙেন শহরে ছুরি হামলায় তিনজন প্রাণ হারানোর ঘটনার পর অভিবাসনবিরোধী মনোভাব আরো বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।</p> <p>জুবি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, এএফডি জিতলে ‘আমাদের আরো বেশি বর্ণবাদের শিকার হতে হবে। বিষয়টা অপমান ছাড়িয়ে শারীরিক আঘাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে’।</p> <p>অন্যদিকে জুবির শহর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরের শহর ড্রেসডেনে থাকেন ইসমাইল দাভুল। তুরস্কে জন্ম নেওয়া দাভুল ২০০৬ সালে জার্মানিতে পড়তে গিয়েছিলেন। ১১ বছর ধরে তিনি ফরেনার্স কাউন্সিলে কাজ করছেন। তরুণ অভিবাসীদের সহায়তা করা তার কাজ। রবিবারের নির্বাচনে এএফডি জিতলে কী পরিবর্তন হতে পারে—এমন প্রশ্ন এখন তাকে প্রায়ই শুনতে হচ্ছে বলে জানান দাভুল। তিনি বলেন, ‘সবাই আসলে ভয় পাচ্ছেন।’</p> <p>দাভুল আরো বলেন, অভিবাসীদের ওপর হামলা অতীতে বিরল ঘটনা ছিল। তখন এমন ঘটনা ঘটলে গণমাধ্যমে তার সমালোচনা করা হতো। এখনো গণমাধ্যমে সমালোচনা হয়, তবে ততটা নয়। ‘এখন প্রায় প্রতিদিনই হামলার কথা শুনি। চেহারা, চামড়ার রং বা উচ্চারণ, বিভিন্ন কারণে হামলা হচ্ছে।’</p>