<p>আমার বাড়ি পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলায়। সম্প্রতি আমি সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। আমরা দুই বোন; আমার বড় বোন সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন কলেজে অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। ছোটবেলাতেই বাবা মারা যান, তখন আমি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তাম। বাবা ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রি। অনেক কষ্ট করে আমরা পড়াশোনা চালিয়ে গেছি।</p> <p>এসএসসিতেও আমি জিপিএ-৫ পেয়েছিলাম এবং প্রতিটি বিষয়ে ভালো নম্বর অর্জন করেছিলাম। তবে এসএসসির পর কলেজে ভর্তি ও অন্যান্য খরচ কীভাবে সামলাব, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তখনই আমার পাশে দাঁড়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। ৩১ জানুয়ারি ২০২৩-এ আমাদের ১০২ জন শিক্ষার্থীকে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে প্রতিজনকে ভর্তি ও অন্যান্য খরচ বাবদ নগদ পঁচিশ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এছাড়াও, তারা প্রতিশ্রুতি দেন যে, পরবর্তী দুই বছর মাসিক বৃত্তি প্রদান করবেন এবং মেডিকেল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে সর্বোচ্চ সহায়তা করবেন। তারা সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। প্রতি মাসে এই বৃত্তি আমার পড়াশোনার অনেক খরচ মেটাতে সাহায্য করেছে।</p> <p>আমার মা গৃহিণী, আর পরিবারের আয়ের কোনো নির্দিষ্ট উৎস নেই। বসুন্ধরা থেকে পাওয়া এই বৃত্তি প্রাইভেট পড়াশোনার খরচ বহন করেছে, যা না পেলে হয়তো এইচএসসিতে ভালো ফলাফল করতে পারতাম না। ছোটবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। বর্তমানে রাজশাহীতে মেডিকেলের জন্য কোচিং করছি, যার পেছনেও বসুন্ধরার এই বৃত্তির অবদান অনেক। এই বৃত্তি আমাকে আমার সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণে পাশে থাকার জন্য বসুন্ধরার প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।— মোহনা রাণী সূত্রধর</p> <p>প্রসঙ্গত, দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেখায় অসামান্য সফলতা অর্জন করেছেন। বিভিন্ন মানুষের সহযোগিতায় ২০২২ সালে সফলতার সাথে এসএসসি পাস করা শতাধিক শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার পথ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। দেশের বৃহত্তম শিল্প পরিবার বসুন্ধরা গ্রুপ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবরগুলো দেখে তাদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।</p>