<p>ক্ষুধা পেলে কাজে মন বসে না। এ অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই সবার কমবেশি হয়েছে।কিন্তু কেন?</p> <p>মস্তিষ্কের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন গ্লুকোজ। এটা আমরা খাবার থেকে পাই। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোবায়োলজিস্ট ড. রবার্ট্সের মতে, ‘শরীরে গ্লুকোজ কমে গেলে মস্তিষ্ক সিগন্যাল পাঠায়—খাবারের প্রয়োজন। এই সংকেতের জন্য মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়।’ অর্থাৎ ক্ষুধার সময় মস্তিষ্ক খাবারের দিকে মনোযোগ দেয়, তাই কাজের প্রতি আগ্রহ কমে যায়।</p> <p>ক্ষুধা লাগলে শরীরের মধ্যে কর্টিসল নামের এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়। এটা মানসিক চাপ বাড়ায়। অস্ট্রেলীয় নিউরোসায়েন্টিস্ট লিন্ডা পার্কের মতে, ‘ক্ষুধার সময় কর্টিসল নিঃসরণ বেড়ে যায়। এটা আমাদের উদ্বিগ্ন করে তোলে। ফলে, ক্ষুধার সময় মনোযোগ নষ্ট হয় এবং কাজের প্রতি আগ্রহও কমে যায়।’</p> <p>বিজ্ঞানীরা বলছেন, ক্ষুধা লাগলে মানুষ সহজেই বিরক্ত হয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ড. জেমস অ্যান্ড্রুসের মতে, ‘ক্ষুধা পেলে  আমাদের সহনশীলতা কমে যায় এবং ছোট ছোট বিষয়ে বিরক্তি আসে। এই কারণে, আমরা যখন ক্ষুধার্ত হই, তখন ছোট ছোট কাজে মনোযোগ ধরে রাখা কষ্টকর হয়ে যায়।’</p> <p>ক্ষুধা লাগলে শরীরের এনার্জি কমে যায়। কারণ খাবার থেকে শক্তি না পেলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. ক্যাথরিন স্মিথ বলেন, ‘শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি না থাকলে মানুষ কাজের প্রতি আগ্রহ হারায়। ফলে অলসতা ভর করে শরীরে।’</p> <p>বিজ্ঞানীরা বলছেন, কিছু উপায় অবলম্বন করে ক্ষুধার কারণে মনোযোগ হারানো এড়ানো সম্ভব। যেমন সময়মতো খাবার খেলে শরীর ও মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত গ্লুকোজ পায়। ফলে  মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়।</p> <p>উচ্চ প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার—যেমন বাদাম, ডাল ইত্যাদি খেলে দীর্ঘসময় ক্ষুধা লাগে না এবং এনার্জি বজায় থাকে। এছাড়া, অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকার চেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়া ভালো। এতে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক থাকে।</p> <p>সূত্র: হাউ ইটস ওয়ার্কস<br />  </p>