<p>বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে যে কয়টি সংস্কার প্রয়োজন, এখন শুধু সেগুলোই সরকার করতে পারে। ব্যাপক সংস্কারের জন্য জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের কাছে যেতে হবে। </p> <p>তিনি বলেন, ‘যেসব বিষয়ে সবার ঐক্যমত রয়েছে, সেটা তারা সংস্কার করতে পারে। বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো আপত্তিও নেই। একমাত্র সেই কয়টি সংস্কার, যার মাধ্যমে আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে পারি জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে সরকার এখন সেই সংস্কারগুলোই করতে পারে। বাকি সংস্কারের জন্য দেশের জনগণের কাছে ভোটের জন্য যেতে হবে।’</p> <p>মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘টেইক ব্যাক বাংলাদেশ : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে আমীর খসরু মাহমুদ এসব কথা বলেন। ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটস এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।</p> <p>ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি এন্ড ভোটার রাইটস’র আহ্বায়ক সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে ও ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি এন্ড ভোটার রাইটসের সদস্য সচিব হুমায়ুন কবির বেপারী’র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, ‘বিএনপির জন্য সংস্কার কোনো নতুন বিষয় নয়। ৬ বছর আগে খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছেন। ১ বছর আগে তারেক রহমান ৩১ দফা সংস্কার ঘোষণা করেছেন। এটা বিএনপি একা করেনি। আমাদের যুগপৎ আন্দোলনে যারা ছিলেন, তাদের সবাইকে নিয়ে করেছেন। বিএনপি একা তো বাংলাদেশ না, সবাইকে নিয়েই বাংলাদেশ। এটার বাইরে ছিল শুধু আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা।’</p> <p>তিনি বলেন, দলগুলো তাদের নিজস্ব প্রস্তাব নিয়ে জনগণের কাছে যাবে। জনগণ সিদ্ধান্ত দেবে, আগামী সংসদে সেগুলো পাস করবে, কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু জনগণকে বাইরে রেখে কোনো কথা জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।</p> <p>নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া জনগণ আর কোনো কথা শুনতে চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে, বাংলাদেশ কোন পথে যাবে। তারেক রহমান (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) সংহতিকে ভালোভাবে ধরেছেন। তিনি কোনো দলকে চিন্তা করছেন না, পুরো দেশকে নিয়ে চিন্তা করছেন।</p> <p>আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব উনার একটা বয়ান তৈরি করেছিল বাংলাদেশ কীভাবে চলবে। আবার ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারে আরেকটা বয়ান ছিল যে উন্নয়ন গণতন্ত্রের ঊর্ধ্বে চলে গেছে। উন্নয়ন আর গণতন্ত্র যে হাত ধরে চলে সেটা সে বিশ্বাস করে নাই। ফ্যাসিস্টরা সবসময় ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে উন্নয়নের কথা ব্যবহার করে।’</p> <p>অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ড. এম মুজিবুর রহমান বলেন, স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকার পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে যদি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয় তাহলে নাগরিকদের এই প্রত্যক্ষ ভোট প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে প্রতিটি নাগরিকের সঙ্গে রাষ্ট্রের মালিকানার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।</p> <p>তিনি বলেন, যখন একটি রাষ্ট্রে এটি প্রমাণিত হবে যে, কোনোভাবেই নাগরিকের ভোট ছাড়া জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া সম্ভব নয় তখন বোঝা যাবে নাগরিকদের সঙ্গে রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।</p> <p>আলোচনায় অংশ নেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ডক্টর মতিনুর রহমান, রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল (অব.) আব্দুল হক, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রফেসর ডক্টর ইকবাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহবুব, বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সিনিয়র সাাংবাদিক ও কলামিস্ট আমিরুল ইসলাম কাগজি, বাগেরহাট জেলা বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ লায়ন ডক্টর ফরিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু সুরঞ্জন ঘোষ। </p>