<p>গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় যে সংস্কার করলে বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাবে আমরা তা করতে চাই। </p> <p>গতকাল ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের একথা বলেন।</p> <p>নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল নায়ক এদেশের জনগণ এবং সাধারণ শিক্ষার্থী। তাদের আন্দোলনের ফলেই আমি বেঁচে আছি। সাধারণ মানুষরাই মূলত রাজপথে নেমে এসে আমাদের নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আমি আজকে সেই জনগণ এবং আন্দোলনে শহীদ ও হতাহতদের গভীর শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছি।</p> <p>তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে আমরা এটি স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় ছিলাম যার হাত থেকে সমাজের কোনো স্তর বা অংশ রেহাই পায়নি। বিটিআরসিতে গত ১৬ বছর নানা সমস্যা ছিল যা সমাধান হয়নি, অনেক দুর্নীতির কথা শোনা যাচ্ছে। বিটিআরসি নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই কারণ গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সে জায়গা থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই।</p> <p>আমাদের দেশের মূল সমস্যা হচ্ছে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি। প্রাতিষ্ঠানিক কোন সিস্টেম ডেভেলপ হয়নি। প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো গড়ে উঠলে কোন ব্যক্তি চাইলেও তার ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব হতো না। স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের দেশে এক ব্যক্তি কেন্দ্রিক ক্ষমতার চর্চা হয়েছে। এখানে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ব্যক্তির ক্ষমতা প্রয়োগের চর্চা করা হয়েছে। এক ব্যক্তি কেন্দ্রিক এ কাঠামোর নীতি এবং আইন যদি আমরা সংস্কার করতে না পারি তাহলে আমূল পরিবর্তন বলতে আমরা যা বুঝি তা কখনোই আসবে না।</p> <p>বিটিআরসি সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে গণহত্যা চালানো হয়েছে, গুম করা হয়েছে যার সঠিক তথ্য আমরা এখনো পাচ্ছি না। আমাকেও গুম করা হয়েছিল কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস আজ আমি সেই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা এবং সেখানেই দাঁড়িয়েই কথা বলছি।  </p> <p>নাহিদ ইসলাম বলেন, তরুণ প্রজন্ম যে নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায় বা রাষ্ট্রব্যবস্থায় তারা যে পরিবর্তন  চায় তা অনেকেই মেনে নিতে পারছে না। তাই মানসিকতা পরিবর্তন করে সবাইকে মানুষের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে কাজ করতে আহ্বান জানান উপদেষ্টা। </p> <p><strong>বাংলাদেশে এআই হাব করতে আগ্রহী কোরিয়া: </strong>কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ারে নিজস্ব অর্থায়নে এআই হাব করতে চায় কোরিয়া। গতকাল রবিবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অফিস কক্ষে উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে কোরিয়া এম্বাসির বাণিজ্য প্রতিনিধি স্যামসু কিম এবং অ্যাকোট গ্রুপের প্রধান নির্বাহী অ্যাডওয়ার্ড কিম এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।</p> <p>স্যামসু কিম বলেন, বাংলাদেশে অনলাইন ন্যাশনাল ট্যাক্স সিস্টেম, ই কাস্টমস ক্লিয়ারিং সিস্টেম, ন্যাশনাল ল্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম, ই ট্যাক্স সিস্টেমে বাংলাদেশের সঙ্গে কোরিয়া যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী।</p> <p>নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহী তাই তাদের তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি বিকাশে অনেক কর্মক্ষেত্র তৈরি করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন উপদেষ্টা।</p> <p>এডওয়ার্ড কিম এটুআই এ বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করলে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে এটুআই ইউএনডিপির অর্থায়নে চলছে। এ বছর ডিসেম্বরে এটুআই-এর সঙ্গে ইউএনডিপির চুক্তি শেষ হয়ে যাবে সেক্ষেত্রে এটুআই এর সঙ্গে এডওয়ার্ড কিমকে আলোচনায় জন্য বলেন। পাশাপাশি জনতা টাওয়ার তৈরির বিষয়েও হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য পরামর্শ দেন উপদেষ্টা।</p> <p>স্যামসু কিম বলেন, বাংলাদেশে অভিজ্ঞ লোকবল থাকলেও তথ্যপ্রযুক্তি প্রকৌশলীর অভাব রয়েছে। এক্ষেত্রে তারা বাংলাদেশি তরুণদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রকৌশলী বানাতে আগ্রহী। এর বাইরে তিনি ন্যাশনাল ইনফরমেশন প্রজেক্ট এর বিষয়েও উপদেষ্টা কে অবহিত করেন।</p> <p>জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ন্যাশনাল ইনফরমেশন প্রজেক্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে আমাদের সবার জন্য। যেহেতু এটা একটি জাতীয় নীতির বিষয়। তাই সরকার থেকে এই নীতি আমরা গ্রহণ করব কিনা সেটি স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।</p>