<p style="text-align:justify">শাক্তি-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা ও প্রশাসনিক স্বাভাবিকতা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি<br /> ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। টিআইবি'র পক্ষ থেকে ৫টি বিষয়কে আশু প্রাধান্য দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে সার্বিকভাবে নীতি-নির্ধারনী পর্যায়ের সংস্কার-সম্পর্কিত নয়টি কৌশলগত বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">আজ বুধবার ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে 'নতুন বাংলাদেশ: দুর্নীতি প্রতিরোধ, গণতন্ত্র ও সুশাসন' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরেন টিআইবি'র নির্বাহী পরিচালক মো. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ, গণতন্ত্র প্রশাসনকের সুপারি প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্র কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংস্কারে লক্ষ্যে ওই সকল সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">সংবাদ সম্মেলনে আশু করণীয় বিষয়ে আরো বলা হয়, নজিরবিহীন প্রাণহানিসহ বহুমাত্রিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য সরাসরি ও হুকুমের অপরাধে দায়ী সকলকে জাতিসংঘের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে বিচারপ্রক্রিয়া যেন কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তা নিশ্চিতে যথাযথ আইনসম্মত-প্রক্রিয়া অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। <br /> অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের কার্যকর জবাবদিহির অনুকরণীয় উদাহরণ স্থাপনে দুদক, বিএফআইইউ, এনবিআর, সিআইডি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে। "নতুন বাংলাদেশ' এর অভীষ্ট ও লক্ষ্য অর্জনে রাষ্ট্র-সংস্কারের অপরিহার্য কাঠামো বিনির্মাণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কৌশলপত্র প্রকাশ করতে হবে।</p> <p style="text-align:justify">বর্তমান সরকারের কৌশলগত ক্ষেত্র হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত, আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ ও অর্থপাচার রোধ, সাংবিধানিক, সংবিধিবদ্ধ, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে কার্যকর, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তথ্য অধিকার ও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে কার্যকর, ব্যাংক খাত সংস্কার এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পরিবেশ খাতের উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">এই কৌশলগত প্রস্তাবনার ধারাবাহিকতায় টিআইবি আরো সুনির্দিষ্টভাবে খাত ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করতে আগ্রহী বলেও জানানো হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের দায়িত্ব বর্তমান সরকারের। তারাই ঠিক করবে সংস্কার কাজে কত সময় লাগবে। একটির পরিবর্তে আরেকটি দলীয় কতৃত্ববাদি সরকার জনগণ চায় না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহে মস্তিরবিহীন রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন ঘটে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ৮ আগস্ট অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের কাছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার মূল প্রত্যাশা একটি স্বাচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষমাহীন "নতুন বাংলাদেশ” গড়ার উপযোগী রাষ্ট্রকাঠামো ও পরিবেশ তৈরি করা। </p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, সার্বিক রাষ্ট্র পরিচালনা কাঠামোকে দলীয়করণ ও পেশাগত দেউলিয়াপনা থেকে উদ্ধার করা ছাড়া দুর্নীতির কার্যকর নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব। জনপ্রতিনিধিত্ব, সরকার ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও চর্চায় এমন আমূল পরিবর্তন উদ্ধার করা, যেন জনগণের রায় ও অর্পিত ক্ষমতায় এবং জনগণের কাছে কার্যকর জবাবদিহিতায় রাষ্ট্র পরিচালিত হয়।</p>