<p>সম্প্রতি ইরানে আট বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ায় বেশ আলোচনায় উঠে এসেছেন ইরানি নির্মাতা মোহম্মদ রসুলফ। এই নির্মাতাকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির ইসলামিক বিপ্লবী আদালত। একই সঙ্গে তাকে চাবুক মারার আদেশও দেওয়া হয়েছে। তার নির্মিত ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’ নিষিদ্ধ করা হয়েছে দেশটিতে। তবে সেই সিনেমার জন্যই বিশ্বব্যাপী প্রশংসা ও সম্মান কুড়াচ্ছেন এই নির্মাতা।</p> <p>চলতি বছর বৈশ্বিক বিনোদন দুনিয়ায় বহুল চর্চিত নামে পরিণত হয়েছেন রসুলফ। ইরানে নিষিদ্ধ হলেও তার সিনেমাটি  ২০২৫ সালে জার্মানির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছে অস্কারে। আর সর্বশেষ সুখবরটা এলো আরব বিশ্ব থেকে। তার নির্মিত ‘দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ’ সেরা ইউরোপীয় চলচ্চিত্র হিসেবে ‘আরব ক্রিটিকস অ্যাওয়ার্ড’ জিতে নিয়েছে এবারের আসরে। </p> <p>দ্য হলিউড রিপোর্টারের প্রতিবেদন অনুসারে, ‘আরব ক্রিটিকস অ্যাওয়ার্ড’ ঘোষণা করা হয় মিসরের আর গুনা চলচ্চিত্র উৎসবে। ১৫টি আরব দেশ থেকে নির্বাচিত বিচারকমণ্ডলী মোট ২২টি ইউরোপীয় চলচ্চিত্র থেকে রসুলফের সিনেমাটিকে নির্বাচন করেছে। রসুলফ নিজে ইরানীয় হলেও তার দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ মূলত ফ্রান্স, জার্মানি ও ইরানের যৌথ প্রযোজনা। এমনকি একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের আসরে সিনেমাটি জার্মানির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে আন্তর্জাতিক ফিচার বিভাগে।</p> <p>দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ গল্পের প্লট তৈরি হয়েছে ২০২২ সালে ইরানে ঘটে যাওয়া আন্দোলনের ওপর। প্রধান চরিত্র ইমান বিচারক হিসেবে উন্নীত হওয়ার পরই তেহরানে আন্দোলন দেখা দেয়। একদিকে পরিস্থিতি উত্তাল হতে থাকে, অন্যদিকে ইমান চলে যেতে থাকে সরকারের পক্ষে। এর প্রভাব পড়ে পারিবারিক জীবনে। সিনেমাটি চলতি বছরে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়, সেখানে জুরি পুরস্কার পায়।</p> <p>রসুলফ ইরানীয় শাসনের একজন সরব সমালোচক। ২০২২ সালের জুলাইয়ে তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন আদালত। এর পরও তিনি গোপনে সিনেমার বিভিন্ন অংশের শুটিং চালিয়ে যান। তারপর তিনি হেঁটে বহু কষ্টে দেশ থেকে পালাতে সক্ষম হন। বর্তমানে তিনি বসবাস করছেন জার্মানিতে।</p> <p>‘দ্য আরব ক্রিটিকস’ অ্যাওয়ার্ডের আসরে ইউরোপীয় চলচ্চিত্র বিভাগ চালু করা হয় ২০১৯ সালে। চালুর পেছনে কৃতিত্ব ইউরোপিয়ান ফিল্ম প্রমোশন (ইএফপি) এবং আরব সিনেমা সেন্টার (এসিসি)। সিনেমায় বৈচিত্র্য আনা ও আরব অঞ্চলে সিনেমাশিল্পকে সমৃদ্ধ করার উদ্দেশ্যেই এর যাত্রা শুরু। বিশেষ করে আরব জুরি বোর্ড ইউরোপ ও আরব দুনিয়ার মধ্যে বিদ্যমান পার্থক্যকে কমিয়ে এনে সাংস্কৃতিক সেতু স্থাপন করতে চায়। ইউরোপীয় সিনেমাকে পাঠ করতে চায় নয়া প্রেক্ষাপট নিয়ে। এর আরব ক্রিটিকস’ উইনার ছিল ফলেন লিভস (২০২৩), ইও (২০২২) এবং ১০৭ মাদার্স (২০২১)।</p>