<p>দ্রুততম সময়ে যে কজন অভিনেতা দর্শকের হৃদয়ে পৌছে ছিলেন তাদের মধ্যে সালমান শাহ অন্যতম। আজ এই ক্ষণজন্মা নায়কের জন্মদিন। অল্প সময়ের ক্যারিয়ারে ছিলেন সাফল্যর চুড়ান্ত শিখরে। বেঁচে থাকলে আজ ৫৩ বছরে পা রাখতেন সালমান শাহ। ১৯৭১ সালে আজকের এই দিনে পৃথিবীর আলো দেখেছিলেন তিনি। আর ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে।</p> <p>সেদিন যেন শোবিজ অঙ্গন থেকে শুরু করে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। আজও স্বপ্নের এই নায়ককে হারানোর সেই বেদনা ভুলতে পারেননি তার ভক্তরা। অনেকেই বলেন, এই নায়কের চলে যাওয়া কি স্বাভাবিক মৃত্যু? আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড? তা আজও রহস্য।</p> <p>ক্ষণজন্মা এই নায়কের পরিবার মনে করেন, এটি স্বাভাবিক কোনো মৃত্যু ছিল না। পরিকল্পিতভাবে ‘হত্যা’ করা হয়েছে সালমান শাহকে এমন অভিযোগ এনে সালমানের মা নীলা চৌধুরী আইনের আশ্রয়ও নিয়েছেন। তার অভিযোগের আঙুল সালমানের স্ত্রী সামিরার দিকে। শুধু তাই নয়, সামিরাকে করা হয়েছে মামলার এক নম্বর আসামিও।</p> <p>সালমানের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হননি সামিরা। যা বলেছেন আদালতেই। সংবাদমাধ্যমে দু-একটি সাক্ষাৎকার দিলেও সবসময় চেয়েছেন নিজেকে আড়াল রাখতে।</p> <figure class="image"><img alt="1" height="600" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/05-11-2023/সালমান শাহ স্ত্রী.jpg" width="1000" /> <figcaption>স্ত্রীসহ সালমান শাহ</figcaption> </figure> <p>অমর এই নায়কের জন্মদিন উপলক্ষে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন সামিরা। জানিয়েছেন অজানা অনেক কথা। শুরুতেই জানতে চাওয়া হয়, বেঁচে থাকতে সালমান শাহর জন্মদিনে বিশেষ কী আয়োজন থাকত? উত্তরে সামিরা বলেন, ইমন (সালমান শাহ’র ডাক নাম) আসলে সবসময় নিজের নয়, অন্যের কথা ভাবতেন। এটি ছিল ওর অনেক বড় একটি গুণ। বেঁচে থাকতে ইমন কখনও সেভাবে নিজের জন্মদিন পালন করত না। তবে আমার জন্মদিনে ও সবসময়ই চেষ্টা করত বিশেষ কিছু করার। একবার ১১ তলা বিল্ডিং থেকে আমার চোখ বেঁধে নিচে নামানো হয়। এরপর চোখ খুলে দেখি, উপহারের প্যাকেটে মোড়ানো একটি গাড়ি। সেদিন অবাক হয়ে গিয়েছিলাম, ওর উপহার দেখে। যে লাল গাড়িটি সবাই দেখেছেন সেটি ইমন আমাকে উপহার দিয়েছিল জন্মদিনে। এমন অসংখ্য সারপ্রাইজ ও আমাকে দিয়েছে।’</p> <p>আপনারা কি সংসার জীবনে সুখী ছিলেন? জানতে চাইলে সামিরা বলেন, ‘কেন না! আমরা দুজন দুজনকে অনেক ভালোবাসতাম। আমি অনেক হ্যাপি ছিলাম। আমাদের মাঝে মনোমালিন্য হলে ইমন তা ভরিয়ে দিত ভালোবাসা দিয়ে।’</p> <p>তাহলে সালমানের মায়ের (নীলা চৌধুরী) অভিযোগ প্রসঙ্গে সামিরা বলেন,‘ বিয়ের আগে সালমানের মা আমাকে খুব পছন্দ করতেন। বিয়ের পর তিনি যখন জানতে পারেন এই বিয়েতে আমার পরিবারের মত ছিল না। তখন থেকে তিনি আমাকে অপছন্দ করতে লাগলেন। আমি সবসময়ই তাকে শাশুড়ি নয়, মা হিসেবে দেখতাম। কিন্তু তারপরও তার সঙ্গে আমার এমন দূরত্ব কেন হয়েছে, তা আমার জানা নেই।’</p> <p>কী হয়েছিল সেদিন (৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬), যার কারণে সালমান আত্মহত্যা করল? সামিরা বলেন, ‘আত্মহত্যা করার মতো তেমন কিছুই হয়নি। সেদিন ওর সঙ্গে একটু কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। একটা পর্যায়ে অভিমান করে ও রুমে চলে যায় আর দরজা বন্ধ করে দেয়। আমি তখন অন্য রুমে ছিলাম। এর মধ্যেই সবকিছু ঘটে যায়। আমার চিৎকার শুনে ফ্লাটের লোকজন ছুটে আসে। খবর পেয়ে ইমনের মা-ও ছুটে আসে। এরপর রুম থেকে বেরিয়ে আসে ওর ঝুলন্ত দেহ।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সালমান শাহকে স্মরণ করে যা লিখলেন শাবনূর" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/19/1726738050-6c56cf2be2224d2709e2450fdfb139e2.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সালমান শাহকে স্মরণ করে যা লিখলেন শাবনূর</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2024/09/19/1426906" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি আরও বলেন, ‘এমন কথা-কাটাকাটি ওর সঙ্গে আগেও হয়েছে। আমার ওপর অনেক অভিমানও করেছিল ও। আরেকটা বিষয় ইমন কিন্তু এর আগেও তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু চতুর্থবার ওকে আর ফেরানো যায়নি। আপনারা যদি খোঁজ নেন, তাহলে সেটি জানতে পারবেন।’</p> <p>কী কারণে তিনবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন, জানতে চাইলে সামিরা বলেন, ‘কেন সেটি আমার সঠিক জানা নেই। তিনবারই ছিল আমার বিয়ের আগে। দুইবার ওকে মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ও একবার ওকে নেওয়া হয় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে। আপনারা চাইলে হাসপাতালের রেকর্ড চেক করে দেখতে পারেন। আসলে, মানসিকভাবে ওর মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাটা বেশি কাজ করতো।’</p> <p>আরও বলেন, ‘ওইদিন আত্মহত্যার পর ইমনকে ওর পরিবারের লোকজন দ্রুত নিয়ে যায় হাসপাতালে। চিকিৎসক ওকে মৃত ঘোষণা করলে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দরে, সেখান থেকে সিলেটে। ওর শেষ মুখটাও আমাকে দেখতে দেওয়া হয়নি।’</p> <p>কেন? উত্তরে সামিরা বলেন, ‘যেদিন ইমন আত্মহত্যা করে সেদিনই ইস্কাটনের বাসাতে ওর মা আমাকে অনেক আজেবাজে কথা বলে বাসা থেকে বের করে দেয়। সেখানে ওর ছোট ভাই ও মামাও ছিল। ইমনকে তারা নিয়ে যায় হাসপাতালে। আমি হাসপাতালে বা সিলেট যেতে চাইলে ওরা আমাকে আসতে দেয়নি।’</p> <p>সালমানের মা নীলা চৌধুরী বিভিন্ন সময় জানিয়েছেন, আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক ছিল! আর এ কারণেই নাকি তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে? সামিরার কথায়, ‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা ও ভিত্তিহীন। এসব কথা উনি রটিয়েছে। শুধু তাই নয়, এমন কথাও রটানো হয়েছে—একটা অনুষ্ঠানে আজিজ মোহাম্মদ ভাই আমার গায়ে হাত রাখে। সেই অনুষ্ঠানে ইমনের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বও হয়। এটাও মিথ্যা কথা। আসলে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে আমি ঠিকমতো চিনতামই না। তবে ইমনের মা তাকে চিনতেন। তিনি আরও অনেককেই চিনতেন।’</p> <p>সবশেষে সামিরা বলেন,‘ইমনের বাবা একজন ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। উনি যখন রমনা থানায় কেসটি ফাইল করেন, তখন কিন্তু ইউডি মামলা (অপমৃত্যু) হিসেবে ফাইল করেন। পরবর্তীতে সালমানের মা এটি হত্যা বলা শুরু করেন। এবং সবশেষ মামলাও করেন।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন তার মা" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/06/1725612664-0f88f5da71ce13ee409afbddd8f69166.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সালমান শাহর মৃত্যু নিয়ে নতুন তথ্য দিলেন তার মা</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2024/09/06/1422714" target="_blank"> </a></div> </div> <p> </p>