<p style="margin-bottom:13px">যারা নব্বই দশকের সিনেমার দর্শক তারা সহজেই মনে করতে পারবেন। কারণ ওই সময় সিনেমা হলে বা বিলবোর্ডে শোভা পেতো হাতে আঁকা বিশাল বিশাল ক্যানভাস। যেখানে দেখা যেতো নায়ক নায়িকাসহ বিভিন্ন চরিত্রের মুখায়ব আকানো হয়েছে। সেসব দেখেই দর্শকেরা যেতেন হলে। বসে পড়তেন সিনেমা দেখতে। সিনেমার এমন ব্যানার আঁকিয়ে শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মোহাম্মদ শোয়েব। যিনি শোয়েব ওস্তাদ নামেই বেশি পরিচিত। রোববার (১৭ মার্চ‌) ছবি আঁকতে আঁকতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এই কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।  </p> <p>কিছুদিন আগে শোয়েব ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ নামের চলচ্চিত্রের ব্যানার হাঁতে একে নতুন করে আলোচনায় আসেন। যদিও ডিজিটাল ব্যানার পোস্টারের কারণে তাদের কাজ কমে গিয়েছিল। তবে ছবিটির পরিচালক হৃদি হকের কল্যানে তরুণ প্রজন্মের কাছে নতুন করে পরিচিত পান শোয়েব।</p> <p>তবে ছবিটি মুক্তির বছর খানেক না পেরুতেই শোয়েবের এই মৃত্যতে শোকাহত অনেকেই। তার মৃত্যর বিষয়টি নিশ্চিত করেন পরিচালক ও অভিনেত্রী হৃদি হক। তিনি জানান, ছবি আঁকতে আঁকতেই গতকাল হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ে যান শোয়েব ভাই। তারপর জরুরিভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেলে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে হার্ট অ্যাটাক নাকি স্ট্রোক করে মারা গেছেন শোয়েব, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।</p> <p>রাজ্জাক, কবরী, সোহেল রানা, আলমগীর থেকে শুরু করে ববিতা, জসিম, মান্না, শাকিব—এমন সব নন্দিত তারকার জনপ্রিয় সিনেমার ব্যানার এঁকেছেন শোয়েব ওস্তাদ।</p> <p>মোহাম্মদ শোয়েবের জন্ম ১৯৫৫ সালে। রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের আদাবরে দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সন্তানরাই তাঁকে দেখাশোনা করতেন।</p> <p>উল্লেখ্য, একসময় সিনেমার চরিত্র ও বিশেষ দৃশ্য নিয়ে দেয়ালচিত্র আঁকা হতো প্রতিটি সিনেমা হলেই। সেই চিত্রের শিল্পী হিসেবে বিখ্যাত হয়ে আছেন পিতল রামসুরসহ আরও কয়েকজন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর সিনেমার দেয়ালচিত্র আঁকিয়ে যেসব শিল্পী ভারত থেকে এ দেশে এসছিলেন, তাঁদের হাতেই শুরু হয়েছিল ব্যানার আঁকার প্রচলন। এই হিসাবে পঞ্চাশের দশক থেকে ২০০০ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থায়ী ছিল এই ধরনের চিত্রকর্ম। সেসময় সিনেমার ব্যানার এঁকে দেশজুড়ে পরিচিতি পান মোহাম্মদ শোয়েব।</p>