<p>বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেছেন, ‘পুলিশের সব কিছু ভেঙে পড়েছে। পুলিশে মিলিটারাইজেশনের ফলে কী ক্ষতি হয়েছে, সেটা সবাই দেখছেন। এখন পুলিশে মিলিটারি ব্রেইন ঢুকে পড়েছে। এ জন্য পুলিশে সংস্কার জরুরি।’</p> <p>শনিবার (৩০ নভেম্বর) ‘৫৩ বছরেও পুলিশ কেন জনবান্ধব হতে পারেনি : পুলিশ সংস্কার, কেন? কোন পথে?’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন। </p> <p>রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবী মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত এ মুক্ত আলোচনায় সংগঠনটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য পুলিশের সাবেক উপমহাপরিদর্শক গোলাম রসুল, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ও সাবেক জেলা জজ ইকতেদার আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, বিশিষ্ট দার্শনিক ও গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আনিসুজ্জামান, আইসিটি ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির কো-অর্ডিনেটর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মাজহারুল হক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মনির হোসাইন কাসেমী, পুলিশের সাবেক ডিআইজি মেসবাহুন নবী, সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজ ইয়াসমিন গফুর, ফ্রন্ট পেজ সম্পাদক সেলিম খান প্রমুখ। এ ছাড়া দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, পুলিশ বিভাগ সংশ্লিষ্ট বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও নাগরিক প্রতিনিধিরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পুলিশ সংস্কারে ৯ সদস্যের কমিশন গঠন" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/03/1727976344-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পুলিশ সংস্কারে ৯ সদস্যের কমিশন গঠন</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/03/1431507" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, পলিটিক্যাল ভিশন না থাকলে কোনো সংস্কারই কার্যকর হবে না। তা ছাড়া জনগণকে সম্পৃক্ত করে পুলিশিং করলে বড় সংখ্যক পুলিশের প্রয়োজন হবে না। তা ছাড়া অন্য বাহিনী থেকে পুলিশের কোনো ইউনিটে কাউকে আনলে তাকে অন্তত ৬ মাস পুলিশিংয়ের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের মতো বিভাজিত সমাজে পুলিশিং কঠিন বিষয়। পুলিশ পাবলিক সার্ভেন্ট থেকে ডমিস্টিক সার্ভেন্ট হয়ে গেছে।’ </p> <p>পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য গোলাম রসুল বলেন, ভালো সমাজ হলে ভালো পুলিশ হবে। বিসিএসয়ের বাইরে পুলিশের আলাদা কমিশন করা যায় কি না, তা দেখতে হবে। প্রযুক্তিনির্ভর ফরেনসিক কার্যক্রম চালু করতে হবে। পুলিশের বিষয়ে তদন্ত করতে আলাদা সাব-কমিশন লাগবে। মূল কমিশন এটি ওভারসি করবে। স্থায়ী কমিশন, গবেষণা সেল এবং আলাদা কমিশন কার্যালয় হতে হবে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সংস্কার দরকার যাতে আবার কোনো স্বৈরাচার ক্ষমতায় না আসে : বদিউল আলম" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/27/1732687791-1a30f86fa7e68ae576fbc4a8d13b1953.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সংস্কার দরকার যাতে আবার কোনো স্বৈরাচার ক্ষমতায় না আসে : বদিউল আলম</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/27/1451181" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ও সাবেক জেলা জজ ইকতেদার আহমেদ বলেন, ‘অতীতে অনেক কমিশন হলেও সেগুলো আলোর মুখ দেখেনি। আমাদের তিনটি আইনে পুলিশের ব্যাখ্যা ভিন্ন ভিন্ন। পুলিশ ও আদালতের পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত বিষয়গুলোও সংস্কারের মধ্যে আনতে হবে।’</p> <p>অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আসলে আমরা সবাই ফেল করেছি, পুলিশ একা নয়। নষ্ট লোকদের খুঁজে খুঁজে গত ১৬ বছর পদায়ন করা হতো। আমাদের দেখতে হবে আমরা সংস্কারের বিষয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়ে যাচ্ছি কি না অথবা এ সংস্কার রাজনীতিকরা অ্যালাও করে কি না। </p> <p>সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মাজহারুল হক বলেন, ‘গত ১৬ বছর আমাদের পুলিশ এমনভাবে অ্যাক্ট করেছে যা সিনেমাতেও নেই। র‌্যাম্বো সিনেমাতেও নেই।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সংস্কার নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধ নেই : তারেক রহমান" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/26/1732562176-dcb822a68e385fd6a7d738c8cd39d2b4.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সংস্কার নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিরোধ নেই : তারেক রহমান</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Politics/2024/11/26/1450697" target="_blank"> </a></div> </div> <p>সাবেক ডিআইজি মেসবাহুন নবী বলেন, ‘আমরা গত ৫৩ বছরে ভালো শাসক পাইনি, তাই ভালো পুলিশ পাইনি। এবার সুযোগ এসেছে। একে কাজে লাগাতে হবে। শুধু পুলিশ একা সয়, জাস্টিস সিস্টেমকেও বদলাতে হবে। পুলিশে যখন অন্য বাহিনীর লোকেরা এসেছে, তখন থেকেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু হয়।’</p> <p>সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজ ইয়াসমিন গফুর বলেন, পুলিশের কর্মঘণ্টা ঠিক করা হয়নি, আইনে পুলিশ বাহিনী বলা হয়েছে। পুলিশ সার্ভিস বলা হয়নি। কমান্ডার কেমন তার ওপরও নির্ভর করে কেমন পুলিশ হবে।</p> <p>হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. পারভেজ বলেন, ৩৬ জুলাইয়ের পর পুলিশের মনোজগতেও পরিবর্তন এসেছে। একে ধরে রাখতে হবে। </p> <p>হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা দূর্ভাগ্যপীড়িত জনগণ। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য নতুন কিছু নাই। পুলিশ নিয়ে আমাদের সমাজে আলোচনাও হয় না। মানববন্ধনও হয় না।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সংস্কারের আগে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যেসব প্রশ্ন রয়ে গেল" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/23/1732359000-e0da419712736c80dd38024d8dfeca6c.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সংস্কারের আগে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যেসব প্রশ্ন রয়ে গেল</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/11/23/1449765" target="_blank"> </a></div> </div> <p>মূল প্রবন্ধে বলা হয়, একটি বিবর্তন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ৩৬ জুলাই ২০২৪ এর সৃষ্টি হয়। পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হওয়ার পরিবর্তে সরকার তথা রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের অংশ হওয়ায় ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে পুলিশও জনরোষের শিকার হয়। কোনো একটি গোষ্ঠীর দাবি বা উদ্যোগের ফলে পুলিশ সংস্কার করা প্রায় অসম্ভব। পুলিশের ইতিহাস পাঠ ও পুনঃপাঠ করলেও একই সত্য উদ্ভাসিত হবে। তাই পুলিশ সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য (রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও জনমত) থাকা বাঞ্ছনীয়। পুলিশের যত প্রকারের সংস্কারের প্রস্তাব করা হোক না কেন, ঐকমত্য ছাড়া তা বাস্তবায়ন বা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পুলিশ সংস্কারের যে দাবি উঠেছে তা যৌক্তিক এবং যথাযথ। </p>