<p>রাজধানীর ভাটারা থানাধীন গামকা অফিসের পাশে একটি টিনশেড বাড়িতে বিদ্যুতের তিনটি মিটারের তথ্য গোপন করে নিয়মবহির্ভূতভাবে ফের তিনটি মিটার স্থাপন করা হয়েছে। এসব মিটার স্থাপনের ক্ষেত্রে ডেসকোর বারিধারা বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের একজন কতর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। </p> <p>ভুক্তভোগী মর্জিনা বেগম নামের এক নারীর দাবি, এসব অবৈধ মিটারের কারণে তাদের ভাই-বোনদের মধ্যে পারিবারিক কলহ হচ্ছে। মর্জিনা ও তার বাবার নামে থাকা তিনটি মিটারের তথ্য গোপন করে তার তিন বোন এসব মিটারে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন।<br />  <br /> মর্জিনার তিন বোন ডেসকোর সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আনিসুল নামের এক কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সুবিধা দিয়ে এসব মিটার স্থাপনের অনুমতি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে যারা এসব মিটারের সংযোগ নিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে এবং লাইন বিচ্ছিন্ন করতে ৯ জুলাই ডেসকোর বারিধারা অফিসে মর্জিনা চিঠি দিয়েছেন।</p> <p>ভুক্তভোগী মর্জিনা জানান, মর্জিনা, তার বাবা ও বোনের নামে তিনটি প্রি-পেইউ মিটার ছিল। একেকটি মিটারে আট হাজার করে মোট ২৪ হাজার টাকা বকেয়া ছিল। কিন্তু এসব তথ্য গোপন করে নতুন করে তার সই জাল করে চুক্তিপত্র করে জায়গা ভাড়া দেওয়া হয়। একই সঙ্গে নতুন তিনটি মিটারের আবেদন করেন তার তিন বোন। যখন মর্জিনা বোনদের আবেদনের কথা জানতে পারেন, তখন ডেসকোর অফিসে যোগাযোগ করলে তাকে বলা হয়, ডিমান্ড নোট হয়ে গেছে, কিছু করার নেই। এক পর্যায়ে সেখানে সংযোগও দেওয়া হয়। কিন্তু এসব মিটার গায়েব কিংবা হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কোনো জিডিও করেননি কেউ।</p> <p>মর্জিনা বলেন, ‘তথ্য গোপন করে আমার বোনরা (সেলিনা, আনজুমান আরা, তাসলিমা) বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করেন। পরে ডেসকোর আমিনুল ইসলাম নামের একজন কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্তে গিয়ে জানতে পারেন, সেখানে আগে মিটার ছিল, এই জায়গা নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে একটি মামলাও চলে। আমিনুল স্যারের সত্য রিপোর্টে প্রথমবার সংযোগ নিতে পারেননি আমার বোনরা। এর কয়েক দিন পর আনিসুল নামের আরেক কর্মকর্তা সরেজমিনে গিয়ে রিপোর্ট দেন যে সেখানে আগে কোনো মিটার ছিল না। তিনি টাকার বিনিময়ে নিয়মের বাইরে গিয়ে এসব সংযোগ দিতে সহায়তা করেন। আনিসুলের কারণেই আমাদের বোনদের মধ্যে পারিবারিক কলহ আরো বেড়েছে। তাই এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন চাই।’<br />  <br /> এদিকে তথ্য গোপন করে নেওয়া মিটারের বিষয়ে বারিধারায় ডেসকোর অফিসে আবেদন করেন মর্জিনা। পরে তার বোন আনজুমান আরাকে তথ্য গোপনের কারণ দর্শাতে অফিস চিঠি দেয়।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি আনজুমান আরা। তবে বিষয়টি আইনগতভাবে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন দেখছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক কর্মকর্তা। প্রয়োজনে জরিমানা অথবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হতে পারে। </p> <p>এ বিষয়ে ডেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ বারিধারা কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুরুল হাসান বলেন, ‘ওই সময় যিনি (নির্বাহী প্রকৌশলী) দায়িত্বে ছিলেন, তিনি কিভাবে সেখানে সংযোগ দিয়েছেন তা আমার জানা নেই। তবে আমি থাকলে দিতাম না। তবে যেহেতু সংযোগ একটা প্রক্রিয়ায় দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি জানতে প্রধান অফিসে চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া আনিসুল নামের যে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ তারা করেছেন, সেটি প্রমাণ ছাড়া কিভাবে আমরা বলব যে তিনি এ ঘটনায় জড়িত?’</p> <p>এদিকে আনিসুলের কাছে সরেজমিনের তথ্য গোপনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি যখন সরেজমিনে যাই, তখন কেউ বলেনি যে সেখানে মিটার ছিল। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে একজন অভিযোগ করেছেন, সেটি আমাদের আইন বিভাগ দেখছে, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’</p> <p>এদিকে এ বিষয়ে জানতে আনজুমান আরার মোবাইল ফোনে কল করা হলে গত দুই দিন ধরে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার আরেক বোন সেলিনা বেগম বলেন, ‘এসব পারিবারিক বিষয়কে বড় করার জন্য এমনটি করছে মর্জিনা।’</p>