<p style="text-align:justify">রাজধানীর আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের নকশা অনুমোদন, অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মীয়মাণ কিংবা নির্মাণ করা ভবনের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। তবে রাজধানীর বেইলি রোডে কয়েক মাস আগে একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যুর পর প্রশ্ন দেখা দেয় রাজউকের অভিযানের পরও কিভাবে ভবন ঝুঁকিপূর্ণ থেকে যাচ্ছে! এরপর ভবন তদারকিতে বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে সংস্থাটি। নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি সঠিক নিয়মে ভবন ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেওয়াও শুরু করে।</p> <p style="text-align:justify">তবে রাজউকের দাপ্তরিক আদেশ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত ৯ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত সংস্থাটি আর কোনো ধরনের অভিযান পরিচালনা করতে পারেনি। শুধু জুলাই মাসেই বাতিল হয়েছে অভিযান পরিচালনার জন্য বিভিন্ন জোনের ১৪টি অফিস আদেশ। আর আগস্ট মাসে বাতিল হয়েছে ১৭টি। চলতি সেপ্টেম্বরে ২১টি অভিযানের অনুমোদন থাকলেও গতকাল বুধবার পর্যন্ত একটি অভিযানও পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।</p> <p style="text-align:justify">জানা গেছে, পুলিশের সহায়তা ছাড়া সংস্থাটির এসব অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব নয়। যে কারণে অভিযান পরিচালনার সময় এরিয়া অনুযায়ী ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, ঢাকা পুলিশ সুপার, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে পুলিশ ফোর্স চাওয়া হয়। কিন্তু দেশের বর্তমান বাস্তবতায় পর্যাপ্ত পুলিশ ফোর্স দিয়ে সহায়তা করা সম্ভব হচ্ছে না।</p> <p style="text-align:justify">রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকার (অব.) কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জোনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা ও অনিয়ম করা বিভিন্ন ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অন্যতম। তবে গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। অভিযানে যেতে প্রয়োজনীয় পুলিশ সদস্য পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে আমাদের অভিযান পরিচালনা বন্ধ রয়েছে। ফলে অভিযান কার্যক্রম জমা হয়ে যাচ্ছে।’</p> <p style="text-align:justify">কয়েক দিনের মধ্যে পুলিশ ফোর্স পাওয়া যাবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করছি শিগগিরই আমরা অভিযান পরিচালনা করতে পারব।’</p> <p style="text-align:justify">ডিএমপির উপকমিশনার (ডিসি) পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে থানার কার্যক্রম চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। পুলিশ বাহিনীর বিপুলসংখ্যক গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় নিজেদের কার্যক্রম স্বাভাবিক হওয়ার পর অন্য সংস্থাগুলোকে চাহিদামতো ফোর্স দেওয়া যাবে। তার আগে কিছু বলা আসলেই অসম্ভব।</p> <p style="text-align:justify">বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের অসচেতনতার কারণে রাজউকের নিয়মিত অভিযান গুরুত্বপূর্ণ। নয়তো বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দোষ রাজউকের ওপরই পড়বে।</p> <p style="text-align:justify">নগর বিশেষজ্ঞ ও পরিকল্পনাবিদ আদিল মোহাম্মদ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মানুষ সচেতন হলে তো অভিযান লাগত না। বেইলি রোডের ঘটনায় আমরা দেখলাম একটি ভবনে কত সূক্ষ্মভাবে অনিয়ম করা যায়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল, রাজউকের দায়িত্বশীলরা কেন বিষয়টি নজরে আনলেন না। এখন অভিযান যদি বন্ধ থাকে তবে মানুষ নিয়মের ধার ধারবে না। যে যার মতো ভবন নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়েই ব্যবহার করবে।’</p>