<p>আশুলিয়ায় বার্ষিক ছুটির পাওনা টাকা ও সাত কর্মকর্তাকে অপসারণের দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিন শিন গ্রুপের জেনস প্লাস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। শনিবার (৩০ নভেম্বর) শ্রীপুর এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের আশ্বাসে মহাসড়ক ছেড়ে দেন শ্রমিকরা। </p> <p>বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, বার্ষিক ছুটির পাওনা টাকা এবং সাত কর্মকর্তার অপসারণ চেয়ে দুই মাস ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন কারখানাটির শ্রমিকরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ সব দাবি না মেনে টালবাহানা করে। </p> <p>বৃহস্পতিবার দুপুরে কাজ বন্ধ করে দিয়ে কারখানার ভেতরে শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে তাদের দাবি মেনে নিয়ে দুই কর্মকর্তাকে অপসারণ করে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দাবির টাকার নামমাত্র কিছু টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়া শুরু করে তারা। বাকী টাকা শনিবার দেবে বলে আশ্বাস দেয় কর্তৃপক্ষ।</p> <p>শিন শিন কারখানার সুইং অপারেটর আলেয়া আক্তার, শহিদুল ও শাপলা বেগম জানান, কারখানাটিতে প্রায় এক হাজার ৩০০ শ্রমিক কাজ করেন। তাদের কারো পাঁচ বছর, কারো সাত বছর আবার কারো আরো অনেক বেশিদিনের ছুটির টাকা পাওনা বকেয়া রয়েছে। এসব পাওনা পরিশোধের দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা। আন্দোলনের কারণে কারখানাটির মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সম্পূর্ণ ছুটির টাকা পরিশোধের পরিবর্তে আংশিক প্রদান করে বাকি টাকা বকেয়া রাখে। তিন বছরের ছুটির টাকা জমা হলে এক বছরের টাকা পরিশোধ করে এবং দুই বছরের টাকা বকেয়া রাখা হয়।</p> <p>তারা আরো বলেন, ‘বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ছুটির টাকা পরিশোধের কথা বললেও পরে দেখা যায়, শ্রমিকরা আংশিক টাকা পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার শ্রমিকরা কারখানায় কাজ বন্ধ করে আন্দোলন ও কর্মবিরতি পালন করেন। পরে মালিকপক্ষ কোনো ঘোষণা ছাড়াই শনিবার কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। তাই বাধ্য হয়েই সড়কে নেমেছি।' </p> <p>শনিবার সকালে কারখানায় এসে শ্রমিকরা প্রধান ফটকে বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে বিষয়টি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও মালিক পক্ষ তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। </p> <p>শিন শিন গ্রুপের জেনস প্লাস লিমিটেড কারখানার এইচ আর অ্যাডমিন মো. জামাল জানান, শ্রমিকদের সব পাওনা আইন অনুযায়ী পরিশোধ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির কারণে এমনটি হচ্ছে। তবে এখন ঝামেলা নেই, সব ঝামেলা মিটে গেছে। তবে কারখানাটিতে ছুটি ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে ফোন কেটে দেন ওই কর্মকর্তা।</p> <p>আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মো. মমিনুল ইসলাম জানান, ছুটির টাকাসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবারও আন্দোলন করেন শ্রমিকরা। শনিবার সকালে কারখানায় এসে বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে আবার রাস্তায় নেমে আসেন শ্রমিকরা।</p>