<p style="text-align:justify">সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও আতিথেয়তার ঐতিহ্য পান-সুপারির কদর কমেনি, বরং বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পান হাট-বাজার থেকে কিনে নিজেদের চাহিদা মেটাতেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মানুষ। মিষ্টি পানের চাহিদা থাকায় পান চাষ করেন উপজেলার বেশ কয়েকজন কৃষক। তবে উৎপাদন ভালো না হওয়ায় খরচ তোলা নিয়েই শঙ্কায় দিন পার করছেন তারা। </p> <p style="text-align:justify">জানা গেছে, উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া ও রাজনগর গ্রামে ৩০ বিঘা পতিত জমিতে পান চাষ করে করেন অন্তত ২০ জন কৃষক। </p> <p style="text-align:justify">সরেজমিনে দেখা যায়, নিরাপত্তার জন্য পানের বরজগুরো চারদিক দিয়ে বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। জমির মধ্যে সারিবদ্ধভাবে থাকা পাটকাঠির সঙ্গে জড়িয়ে আছে পানের গাছ। গাছগুলোতে ঝুলছে সবুজ রংয়ের মিষ্টি পান। কৃষকরা পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যদিও তীব্র শীত ও কুয়াশার প্রভাব নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন চাষিরা। কারণ শীত আর কুয়াশায় পানের ক্ষতি হবার শঙ্কা থাকে।</p> <p style="text-align:justify">পানের বরজ মালিকরা বলেন, অভাব অনটনের সংসারে ভাগ্য ফেরাতে পরিত্যক্ত জমিতে স্বল্প পুঁজিতে পান চাষ করেন তারা। তবে পান আবাদ করে তাদের বেশিরভাগই পড়েছেন বিপাকে। পানের উৎপাদন খরচও তুলতে পারবেন না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তারা। </p> <p style="text-align:justify">ফুলবাড়িয়া গ্রামের পান চাষি অসিত সাহা, সজীব চক্রবর্তী ও বিমল মন্ডল কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা পাট-পেঁয়াজের পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে মিষ্টি পান চাষ করে আসছি। প্রতি বিঘায় পানের বরজে এক লাখ ২০ হাজার টাকা মতো খরচ হচ্ছে। ভাল ফলন পেলে দুই লাখ টাকার পান বিক্রি করা যায়। তবে এবার বেশিরভাগ মালিকের বরজে পানের ফলন কম হয়েছে। ফলে এবার তাদের উৎপাদন খরচও উঠবে না। আর যারা হাইব্রিড জাতের পান চাষ করেছে, তারা লাভবান হবেন। তাদের বরজে পান যদি ভালো হয় তাহলে দ্বিগুণ লাভ হবে।</p> <p style="text-align:justify">তারা আরো বলেন, মিষ্টি পান চাষ করে লাভ করার সুযোগ নেই। বাজারে হাইব্রিড জাতের বড় বড় পানের চাহিদা বেশি। দামও ভাল পাওয়া যায়। কিন্তু এক বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের পান চাষ করতে গেলে ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়। যে সামর্থ্য তাদের বেশিরভাগ কৃষকেরই নেই। সরকারি ঋণ সুবিধা আর কৃষি অফিসের সহযোগিতা পেলে আরো ভালো হাইব্রিড জাতের পান চাষ করতে পারবেন বলে জানান তারা। </p> <p style="text-align:justify">সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন সিকদার বলেন, সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নে এবার ৩০বিঘা জমিতে পানের বরজ রয়েছে। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব পড়েনি পানের বরজে। এখনও পান খুব ভালো আছে। সার খৈল ও স্প্রেসহ পানের পরিচর্যায় নানা পরামর্শ দিয়ে আসছি কৃষকদের। ফলন ও দাম বেশি পেলে কৃষকরা দিন দিন পান চাষে আগ্রহী হবেন। সরকারীভাবে কোনো প্রণোদনা আসলে তাদেরকে দেওয়া হবে।</p>