<p>কক্সবাজারের চকরিয়ায় পুলিশ পরিচয়ে তিনজনকে কুপিয়ে জখম করে হত্যা মামলার সাক্ষীকে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। অপহরণের ২৪ ঘণ্টা পার হলেও তার হদিস পাওয়া যায়নি। তবে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।</p> <p>শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে সাহারবিল ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গুরুইন্যা কাটা গ্রামের আবদুল মালেকের বসতবাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। অপহৃত আয়েশা আক্তার তার শ্বশুর আবদুল করিম হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী।</p> <p>হামলায় আহতরা হলেন আবদুল মালেকের স্ত্রী অপহৃত আয়েশা আক্তার (৩০), আলী আহমদের স্ত্রী নুরুজা বেগম (৪০), রিদুয়ানের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৩৫), আলী আহমদের কন্যা ফারজানা ইয়াছমিন (১৯) ও আবদুল মালেকের কন্যা আয়েশা ছিদ্দিকা (১৮)। আয়েশা আক্তার ছাড়া বাকিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। </p> <p>নুরুজা বেগম বাদী হয়ে শুক্রবার থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি এজাহার করেছেন। এজাহারে ঘটনায় জড়িত হিসেবে নামোল্লেখ করা হয় যথাক্রমে আমির হোসেন, শহিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, তোহা, নুরুল আবচার, নেজাম উদ্দিন, সাজ্জাদ হোসেন, রিয়াজ উদ্দিন, রুবেলসহ ৯ জনের। বাকিদের অজ্ঞাতপরিচয় দেখানো হয়েছে। </p> <p>বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঘটনার খবর পেয়ে থানার টহলরত একদল পুলিশ আক্রান্ত বসতবাড়ি পরিদর্শন করে। এরপর সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এ এম রকীব উর রাজা, থানার ওসি মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া। উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং আয়েশা আক্তারকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় দলটি। </p> <p>বাদী নুরুজা বেগম এজাহারে উল্লেখ করেন চলতি বছরের ১ মে তার শ্বশুর আবদুল করিমকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন তার (বাদী) স্বামী আলী আহমদ। হত্যা মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা প্রতিনিয়ত মামলা তুলে নিতে এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য না দিতে হুমকিসহ নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এই কারণে হত্যা মামলার বাদী আলী আহমদ এলাকা ছাড়া এবং দেবর অন্য একটি ঘটনায় মামলায় বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। এই সুযোগে হত্যা মামলার আসামি ও সন্ত্রাসীরা সংঘবদ্ধ হয়ে উপর্যুক্ত ঘটনা সংঘটিত করে। এ সময় বাড়িতে থাকা নারীদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখমসহ নগদ এক লাখ ২৬ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে তারা। এমনকি দেড় বছরের শিশু রেখে দেবর আবদুল মালেকের স্ত্রী আয়েশা আক্তারকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় অপহরণ করে নিয়ে যায়। </p> <p>উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান বলেন, থানায় দায়ের করা অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নেওয়া হয়। পাশাপাশি হত্যা মামলার সাক্ষী আয়েশা আক্তারকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়। তবে এখনো পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করা যায়নি।</p> <p>চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, আক্রান্ত পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত এজাহার পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করা হবে। একইসঙ্গে অপহৃতকে উদ্ধারে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে।</p>