<p>চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার পিয়ন নাজিম উদ্দিন মেয়র ও সচিবের স্বাক্ষর জাল করে কোটিপতি বনে গেছেন। জালিয়াতি করে গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল বাড়ি, কিনেছেন একটি প্রাইভেট কার ও ৬টি পিকআপ। গত ২৫ নভেম্বর নাজিমের বিরুদ্ধে স্থানীয় একজন ঠিকাদার পটিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।</p> <p>জানা যায়, ২০০৫ সালে অষ্টম শ্রেণি পাস করা নাজিম পিয়নের চাকরি পান পটিয়া পৌরসভায়। ২০১২ সালে তৎকালীন পৌর মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ তাকে সহকারী হিসাবরক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। কিছু ঠিকাদারের অভিযোগের পর নাজিমকে কর আদায়কারী হিসেবে বদলি করা হয়। এ সময় তিনি মেয়র ও সচিবের স্বাক্ষর জাল করে সোনালী ও রূপালী ব্যাংকে পৌরসভার নামে দুটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলেন। এসব অ্যাকাউন্টে ঠিকাদারদের জমা দেওয়া অর্থ জমা করে প্রকৃত হিসাব থেকে আত্মসাৎ করেন। প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ভবিষ্যৎ তহবিলের অর্থও আত্মসাৎ করেন নাজিম।</p> <p>নাজিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ঠিকাদারদের পাওনা চেক কৌশলে তুলে নিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করতেন। সরকারি বরাদ্দের অর্থও ভুয়া চালান ও কৃত্রিম ভাউচার তৈরি করে তছরুপ করতেন। বিভিন্ন হাটবাজারের ইজারা ও ভবন অনুমোদনের পে-অর্ডারও তার অবৈধ অ্যাকাউন্টে জমা হতো। এভাবে প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।</p> <p>যারা তার অপকর্ম ফাঁস করতে পারতেন, তাদের দামি গাড়ি, মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ ও নারীর প্রলোভন দেখিয়ে ম্যানেজ করতেন। প্রায় আট বছর ধরে চলা এই দুর্নীতি ২০১৯ সালে প্রকাশ পায়। তখন তাকে পৌরসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়, তবে আইনি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মেয়র তার কাছ থেকে আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। এ ঘটনার পর নাজিম এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। </p> <p>দীর্ঘদিন পরও আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ায় গত ২৫ নভেম্বর ঠিকাদার এস. এম. রেজা রিপন পটিয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলাউদ্দীন ভূঁইয়া জনির কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।</p>