<p>পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার নামকরা এক কিষাণী ও তার তিন ছেলে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সন্ত্রাসীদের ছোড়া ছড়রা গুলিতে আহত হয়েছেন কৃষিতে এআইপি (কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) নুরুন্নাহার বেগম ও তার তিন ছেলে। কিষাণী নুরুন্নাহার অসংখ্য রাষ্ট্রীয় পদকও পেয়েছেন। এ ছাড়া বেদম মারধরের শিকার হয়েছেন তার বড় ছেলে রায়হান কবির হিরোক (৩০)। তার মোবাইল ফোন ও আনুমানিক পঞ্চাশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। </p> <p>মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাবনা ঈশ্বরদীর সলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর পূর্বপাড়া মাস্টারের মোড় এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। </p> <p>আহতরা হলেন- কিষাণী নুরুন্নাহারসহ তার তিন ছেলে রায়হান কবির হিরোক, সিরাজুল ইসলাম মনিক ও মিশুক বিশ্বাস।</p> <p>স্থানীয় ও থানা সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (৮ নভেম্বর) মানিকনগরে আলতাফ শাহের মাজারে বার্ষিক ওরশের নামে চাঁদা নিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা বাবু মালিথার ছেলে যুবদলকর্মী বাপ্পি মালিথার নেতৃত্বে একদল যুবক নুরুন্নাহার বেগমের বাড়িতে যান। এ সময় তারা ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করলে নুরুন্নাহার বেগম তিন হাজার টাকা দেন। চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন রাব্বি মালিথা। ওরশ শেষে পাঁচ লাখ টাকা নেওয়া হবে এবং যদি সেই টাকা দেওয়া না হয় তাহলে নুরুন্নাহার বেগমকে হত্যার হুমকি দেন রাব্বি মালিথা।</p> <p>সূত্র আরো জানায়, লিচু ব্যবসার দেনা-পাওনা নিয়ে স্থানীয় লিচু ব্যবসায়ী রিপন ও নুরুন্নাহারের স্বামী রবিউল ইসলামের ছোট ভাইয়ের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। বেশ কিছুদিন আগে এ নিয়ে তাদের মাঝে সালিশি বৈঠকও হয়। সেই বৈঠকে রিপনের টাকা ফেরত দেওয়ার দায়িত্ব নেন নুরুন্নাহার বেগম। কিন্তু কোনো কারণে সেই টাকা দেবরের নিকট থেকে আদায় করে পাওনাদার রিপনকে দিতে ব্যর্থ হন নুরুন্নাহার। এরপর রাব্বি মালিথা সেই টাকা নুরুন্নাহারের কাছ থেকে আদায় করে রিপনকে দেবেন বলে চুক্তিবদ্ধ হন। তারই জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নুরুন্নাহারের বড় ছেলে রায়হান কবির হিরোক নিজ কর্মস্থল ইসলামী ব্যাংক থেকে ফেরার পথে মানিকনগর মাস্টারের মোড় এলাকায় তার পথরোধ করে সন্ত্রাসী আরিফ বাঙ্গালের নেতৃত্বে স্থানীয় বিএনপি নেতা বাবু মালিথা, তার ছেলে রাব্বি মালিথা ও রাজিব মালিথা, শফিকুল, সজিবসহ বেশ কয়েকজন। তারা হিরোককে অপহরণের চেষ্টা করেন। হিরোক চিৎকার করলে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তার মোবাইল ফোন ও সঙ্গে থাকা আনুমানিক নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। একই সঙ্গে তার মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বাপ্পি মালিথার ভাই রাজিব মালিথাসহ অন্যরা।<br />  <br /> এআইপি কিষাণী নুরুন্নাহার বেগম বলেন, ছেলেকে আটকে মারধর করার খবর শুনে অপর দুই ছেলে মনিক ও মিশুকসহ বেশ কয়েকজন হিরোককে উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা বাপ্পি মালিথার ব্যক্তিগত কার্যালয়ের চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করেন। তখন আরিফ বাঙ্গাল ও বাপ্পি মালিথা বন্দুক থেকে নুরুন্নাহার ও তার তিন ছেলের ওপর ছড়রা গুলি ছোড়েন। এতে তিন ছেলেসহ নুরুন্নাহার গুলিবিদ্ধ হন।</p> <p>এসব বিষয়ে আরিফ বাঙ্গাল ও বাপ্পি মালিথার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। </p> <p>ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। থানায় এজাহার দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।</p>