<p style="text-align:justify">ফরিদপুরে মাত্র ৩৫ টাকার জন্য মেয়েকে হত্যা করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে মো. হারুন শেখ (৩৭) নামে এক বাবাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাকে আরো ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে অনাদায়ে আরো ২ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।</p> <p style="text-align:justify">সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের অতিরিক্ত দয়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় দেন।</p> <p style="text-align:justify">রায় প্রদানের সময় আসামি আদালতে হাজির থাকায় পুলিশ প্রহরায় তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত বাবা মধুখালী উপজেলার ভুষণা লক্ষণদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।</p> <p style="text-align:justify">আদালত সূত্রে জানা যায়, মো. হারুন দুটি বিবাহ করেন। তার প্রথম স্ত্রীর বড় সন্তান ১০ বছর বয়সী মেয়ে মাকসুদা আক্তার ওরফে হিরা। শিশুটি তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই মাকসুদা তার বাবা হারুনের পকেট থেকে ৩৫ টাকা চুরি করে স্কুলে যায়। ওই দিন দুপুরে হারুন মাঠ থেকে কাজ করে বাড়িতে এসে জামার পকেটে টাকা খুঁজে পান না। মেয়ে মাকসুদা স্কুল থেকে আসার পর তার কাছে টাকা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে মেয়ে অস্বীকার করে। </p> <p style="text-align:justify">পরে বাবা হারুন মেয়েকে মারধর শুরু করলে এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মাকসুদা। পরে হারুন মেয়ের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করে ঘরের মাচার মধ্যে রেখে দেন। এ ঘটনা মাকসুদার ভাই শোয়ায়েব (তখন ৮ বছর) দেখে ফেলে। শোয়েব চিৎকার দিলে হারুন পালিয়ে যান। এলাকাবাসী মাকসুদাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।</p> <p style="text-align:justify">এ ঘটনায় ওই দিনই মাকসুদার নানা মো. লিয়াকত শেখ বাদী হয়ে মধুখালী থানায় মাকসুদার বাবা হারুনকে একমাত্র আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।</p> <p style="text-align:justify">এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর মাকসুদাকে হত্যার দায়ে বাবা হারুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।</p> <p style="text-align:justify">ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আদালতের পিপি নওয়াব আলী মৃধা বলেন, এ রায়ের ফলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথ সুগম হয়েছে। এর ফলে সমাজে অপরাধপ্রবণতা কমে আসবে।</p>