<p style="text-align:justify">আব্দুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ জাকির হোসেনসহ চার শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউনে অচল হয়ে পড়েছে মেডিক্যাল কলেজ। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ক্যাম্পাসটির ভেতরে কেউ ঢুকতে বা বের হতে পারেনি। </p> <p style="text-align:justify">এদিকে মেডিক্যাল কলেজের মূল ফটকে নোয়াখালীর সন্তান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার, সাবেক মন্ত্রী আবদুল মালেক উকিলে নাম মুছে ফেলে সেখানে নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ লিখে সাইনবোর্ড সাঁটিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।</p> <p style="text-align:justify">সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডোপ টেস্ট দিতে আসা গাড়িচালকরা দাঁড়িয়ে আছেন তালাবদ্ধ নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজের প্রধান ফটকে। অন্যদিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। </p> <p style="text-align:justify">শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর থাকা ক্লাস রুমে তালা ঝুলছে। খোলার দিনেও নেই চিরচেনা ক্যাম্পাস। বিভাগের অফিস রুমও বন্ধ রয়েছে। কমপ্লিট শাটডাউনে অচল নোয়াখালীর আবদুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজ।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, কলেজের চতুর্থ বর্ষের একজন ছাত্র কলেজের অধ্যক্ষকে অশালীন আচরণ এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় তাকে একাডেমিক কাউন্সিল ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করে। এ ঘটনায় তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে গত রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে স্বৈরাচার আখ্যা দিয়ে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাকির হোসাইন, উপাধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিন ও সার্জারি বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ কামরুল হোসাইনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেন শিক্ষার্থীরা। </p> <p style="text-align:justify">দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচিসহ ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন তারা। কালক্ষেপণ হলেও প্রশাসন নিশ্চুপ থাকায় শিক্ষার্থীরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও অধ্যক্ষসহ চার শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। ফলে কার্যত মেডিক্যাল কলেজটিতে অচল অবস্থা বিরাজ করছে।</p> <p style="text-align:justify">আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা পদত্যাগের দাবিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি দিয়েছি। তারা কালক্ষেপণ করছেন কিন্তু পদত্যাগ করছেন না। প্রয়োজনে আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব, তবু তাদের পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ ছাড়া তাদের কোনো পথ নেই। আমাদের একটাই দাবি, খুনি ও স্বৈরাচার হাসিনার দোসর অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ চারজনকে অপসারণ করতে হবে। আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে চাই। তাই আমাদের দাবি মেনে নিক। তা নাহলে আগামীতে আরো কঠোর আন্দোলন হবে। তাদের পদত্যাগ না করিয়ে আমরা ফেরত যাব না।”</p> <p style="text-align:justify">এদিকে আন্দোলনের কারণে ডোপ টেস্ট দিতে আসা লোকজন ভোগান্তিতে পড়েছেন। নুরুল হুদা নামের এক বিদেশগামী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে আমরা ডোপ টেস্ট দিতে পারিনি। আমার ১৭ তারিখে ফ্লাইট আছে। দ্রুত ডোপ টেস্ট না দিতে পারলে ক্ষতি হবে।’</p> <p style="text-align:justify">নামফলক পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী সাবিহা খানম বলেন, ‘কলেজে এখনো একাডেমিক কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু হয়নি। তাই আমরা নাম পরিবর্তনের বিষয়টি অফিশিয়ালি করতে পারিনি, তবে আন-অফিশিয়ালভাবে নাম পরিবর্তন করে দিয়েছি। অতি দ্রুত অফিশিয়ালভাবে নাম পরিবর্তন হবে আশা করেন শিক্ষার্থীরা।’ </p> <p style="text-align:justify">তারা আরো বলেন, ‘পলাতক হাসিনা সরকারের দেওয়া নামটা আমরা রাখতে চাইনি। তাই আমাদের পূর্বের নামেই আমরা ফিরে গিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন স্থানে নতুন নাম শোভা পাচ্ছে। এ বিষয়ে মেডিক্যালের সব শিক্ষার্থীই একমত রয়েছে।’</p> <p style="text-align:justify">সার্জারি বিভাগের শিক্ষক ও আবদুল মালেক উকিল মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার কামরুল হাসান বলেন, ‘একজন ছাত্র কলেজের অধ্যক্ষকে অশালীনভাবে কথা বলায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটূক্তি করায় একাডেমিক কাউন্সিল তাকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করার জেরে শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন করছেন। একাডেমিক কাউন্সিলে ৯ জন সদস্য সর্বসম্মত নিলেও ছাত্ররা অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। আর কলেজের নাম একজন জাতীয় নেতার নামে তার বিষয়ে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত না দিলেও তারা নিজেরাই নামফলক পরিবর্তন করেছে।’</p> <p style="text-align:justify">মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাকির হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের দেওয়া নামকরণ নিয়ে বিষয়টি অবগত আছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আর একজন ছাত্রকে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন অভিযোগ ছিল।</p>