<p>চট্টগ্রামের পটিয়ায় বিভিন্ন লোকজনকে মামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করার অভিযোগে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ নীতি আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী কার্যকলাপের দায়ে উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরীকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।</p> <p>শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে ধলঘাট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ সোলাইমান বাদল ও সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন নাজিম স্বাক্ষরিত এ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।</p> <p>বহিষ্কৃত মিজানুর রহমান চৌধুরী উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের ঈশ্বখাইন গ্রামের মৃত আবদুর রশীদ চৌধুরীর ছেলে বলে জানা গেছে। সে গত কয়েক দিন ধরে আওয়ামী লীগ নেতাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে তাদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আদালতে মামলা দিয়ে আসছিল আবার অনেককে ফোনে মামলার আসামি না করার জন্য চাঁদা দাবি করে প্রতারণা করে আসছিল বলে বিভিন্ন লোকজনের অভিযোগ রয়েছে।</p> <p>এ ব্যাপারে ধলঘাট ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সোলায়মান বাদল বলেন, পটিয়ায় স্থাপিত সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ও থানায় মিজানের বিষয়ে বিভিন্ন ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদান্ত নেওয়া হয়েছে।</p> <p>বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব খোরশেদ আলম বলেন, মিজান একজন টাউট ও প্রতারক। সে বিএনপি নাম ভাঙিয়ে লোকজনের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। পটিয়া থানার ওসিকে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ কোনো অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p> <p>অন্যদিকে, মিজানুর রহমান তার দায়েরকৃত মামলায় একজনকে টাকার বিনিময়ে মামলায় নাম দিয়ে দেওয়ার মোবাইলে কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড হাতে আছে এ প্রতিবেদকের।</p> <p>এদিকে, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে পটিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গণস্বাক্ষরে স্থানীয় জনতা। অভিযোগে বলা হয়েছে, মিজানুর রহমান চৌধুরী একজন প্রতারক, চাঁদাবাজ, মামলাবাজ, স্বার্থান্বেষী, ভূমিদস্যু, জোর-জুলুমবাজ প্রকৃতির লোক। সে দেশের প্রচলিত আইন অমান্যকারী ব্যক্তি বটে। মিজান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো প্রকার সমন্বয়ক বা ছাত্র নয়। আওয়ালামী লীগ, যুবলীগ, বিএনপি, ছাত্রলীগ, জাতীয় পার্টির কোনো প্রকার সদস্য বা নেতা নয়।</p> <p>এরপর থেকেই মামলার আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিগণের নিকট হতে অবৈধভাবে ও জোরপূর্বক চাঁদা দাবি করে আসছে। তাকে চাঁদা না দিলে সিআর মামলাসহ নতুনভাবে আরো মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেবে মর্মে হুমকি-ধমকি প্রদানসহ মা-মাসি খরিয়া গালি-গালাজ করছে। এ অবস্থায় উপরোক্ত আসামির এহেন অন্যায় ও বিবাদী কর্তৃক চাঁদা দাবির বিষয়ে বর্তমানে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। উপরোক্ত বিবরণের আলোকে আসামিকে গ্রেপ্তারপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ এহেন কার্যকলাপ যাতে সে ভবিষ্যতে করতে না পারে সে নিমিত্তে বিবাদীর কাছ হতে মুচলেকা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।</p> <p>অপরদিকে, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে পটিয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।</p> <p>উল্লেখ্য, মিজানুর রহমানের ভাগিনা ইফতেখার রহমান সায়েম নামের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক পরিচয়ে পরে পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দাবি করে এবং মিজান নিজেকে বিএনপি নেতা পরিচয়ে ও শিক্ষার্থীদের ওপর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনা দেখিয়ে পটিয়ার সাবেক দুই সাংসদ মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও সামশুল হক চৌধুরীসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাত ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন গত বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেলে পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।</p> <p>এতে সাবেক দুই সাংসদের পাশাপাশি সাংসদ পুত্র, সাবেক এপিএসসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে পটিয়া থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।</p>