<p>সংখ্যানুপাতিক পার্লামেন্ট চালু করার দাবি জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘পাঁচ বছরের সংসদে এক দল ক্ষমতায় গিয়ে মনে করে, তারা সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। এ কারণে আমরা মনে করি, বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন, গণ অধিকার সব দল যেন সংসদে থাকতে পারে। এ জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চালু এবং সংসদের মেয়াদ চার বছর করতে হবে।’ </p> <p>বুধবার (৩০ অক্টোবর) পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় এই কথা বলেন তিনি। </p> <p>দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সবাই বিনয়ী ভদ্র আচরণ করবেন। বহু রক্ত, আর ত্যাগের বিনিময়ে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে এই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। ফ্যাসিস্ট পতনের পর এ সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলনে কাজ করবে আমরা আশা করি। এখন কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় নাই। আওয়ামী লীগের মতো থানায় গিয়ে ওসির সঙ্গে পায়ের ওপর পা ফেলে গালগপ্প করা, এটা কোনো রাজনৈতিক দল এখন পারবে না।’</p> <p>আওয়ামী লীগ সরকারের আমল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অসংখ্য নেতাকর্মী হামলা, মামলা, নির্যাতন, গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। ছাত্র-জনতার ত্যাগের ফলে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। আগামীতে যেন আওয়ামী লীগের মতো আর কোনো ফ্যাসিবাদ তৈরি না হয় এ জন্য আমরা রাজনৈতিক পরির্বতনের কথা বলছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভোটে নেতা হয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছি। এরপর সারা দেশে নির্যাতন এবং জুলুমের শিকার হওয়া মানুষের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে ২৫ বার ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের হামলার শিকার হয়েছি, জেল খেটেছি, রিমান্ড খেটেছি। কিন্তু আদর্শ থেকে বিচ্যুতি হই নাই।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ওসি হোক, ইউএনও হোক, এসপি হোক, ডিসি হোক সবাই জনগণের জন্য কাজ করবে। যারা জনগণের জন্য কাজ করবে না তাদের সরকারি চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হবে। ভিজিএফ ও ভিজিডির যে সুবিধা এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের চাওয়া-পাওয়ায় হবে না। যারা প্রকৃত সুবিধা পাওয়ার দাবিদার তাদের দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের লোকদের সুবিধা দিলে সরকারি চাকরিজীবীর কিন্তু চাকরি থাকবে না। এত ত্যাগের বিনিময়ে এই অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে কোনো ফ্যাসিস্ট তৈরি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।</p> <p>এলাকার উন্নয়ন সম্পর্কে নুর বলেন, ‘এলাকার মানুষের উন্নয়নের জন্য আমার যা কিছু করার সুযোগ আছে তার সবটুকু আমি করব। আমি জাতীয় নেতা হলেও আপনাদের আমি ভুলে যেতে পারি না। দলের প্রধান হওয়ার কারণে দেশের সব এলাকায় গণ অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। কিন্তু আপনাদের আমি ভুলি নাই। ভুলতে পারি না। এখন থেকে আমার একজন প্রতিনিধি থাকবে আপনারা তার মাধ্যমে সুবিধা-অসুবিধা শেয়ার করবেন। আমি আপনাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা আমার সাধ্যমতো পূরণ করার চেষ্টা করব।’ </p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করেন। তাদের ভোটে ভিপি নির্বাচিত হয়েছি। তাই আগামী সংসদ নির্বাচনে আপনাদের সন্তান হিসেবে আমাকে সংসদ সদস্য নির্বাচনে সহযোগিতা করবেন। দশমিনা-গলাচিপায় কে কোন রাজনৈতিক দল করে, মত করে ওটা আমার কাছে বিবেচ্য নয়, সবাইকে নিয়ে দশমিনা-গলাচিপা বিনির্মাণ করতে চাই। দেশের মধ্যে রোল মডেল হবে গলাচিপা দশমিনা। পুরনো নেতাদের নেতৃত্ব দেখেছেন। রাজনৈতিক দল দেখেছেন। এবার নতুনদের দেখেন আপনাদের এলাকার ছেলে আমি। নির্বাচনে আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা পেলে দশমিনা-গলাচিপাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাব।’</p> <p>এ সময় আরো বক্তব্য দেন শহিদুল ইসলাম ফাহিম উচ্চতর পরিষদ সদস্য গণ অধিকার, আবু হানিফ হৃদয় সহসভাপতি গণ অধিকার পরিষদ, রবিউল ইসলাম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আনিচুর রহমান মুন্না যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, শহিদুল ইসলাম প্রচার সম্পাদক গণ অধিকার পরিষদ, ইউসুফ কাজী কৃষিবিষয়ক সম্পাদক, আব্দুর রহিম সাধারণ সম্পাদক গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা উত্তর, মোসাম্মদ হেলেনা বেগম ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক গণ অধিকার পরিষদ, মো. কামাল হোসেন ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক যুব অধিকার পরিষদ, মো. মিজান হোসেন হাওলাদার সহসভাপতি গণ অধিকার পরিষদ ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম লিটু গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর প্রমুখ।</p>