<p>বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা দেশটাকে তার বাপের জমিদারি ভেবেছিলেন। যা ইচ্ছা, তা-ই করেছেন। কোনো জবাবদিহি ছিল না। তার বিরুদ্ধে কথা বললেই ঘুম, খনি ও আয়নাঘরে আটক রেখে বছরের পর বছর নির্যাতন চালানো হতো। সাংবাদিকরা কোনো কিছু লিখতে পারিনি। লিখলেই ডিজিটাল আইনে জেলখানায় ঢুকিয়ে দেওয়া হতো। এখন ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন।’</p> <p>বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দিনাজপুরে পুলিশের গুলিতে আহত শহরের রাজবাড়ী কাটাপাড়ায় আব্দুর রশিদের কন্যা ও তার পরিবারকে দেখতে গিয়ে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এসব কথা বলেন তিনি।</p> <p>এ সময় আহত পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। </p> <p>তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘মিশকিনের জায়গা আত্মসাৎ করে, তিনি কিসের প্রধানমন্ত্রী। ওই প্রধানমন্ত্রীকে তো আমরা দেখেছি, রাতের বেলায় নির্বাচন, ভোর ৬টার মধ্যে নির্বাচন শেষ, মাইকিং করে গ্রামবাসীকে বলা হয়, যদি ভোট দিতে চান তাহলে ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। যদি বাসায় থাকেন তাহলে বুঝব আপনারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার নমিনেশন পেপার জমা দিতে গেছেন, সেটা রাস্তার মধ্যে আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা কেড়ে নিয়েছে। এই তো শেখ হাসিনা নির্বাচন, এই তো শেখ হাসিনা মার্কা নির্বাচন।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘এরপর আর কী করেছেন আপনারা, গোটা দেশের মানুষকে ঋণে জড়িত করেছেন। ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ১৫-১৬ বছরে ঋণ নিয়েছেন। ঋণ নিয়ে যদি জনগণের উন্নয়নে কাজ করতেন তাহলে এক কথা ছিল, এই ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে এর মধ্যে ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। এটা আমার কথা নয়, এটা সংবাদপত্রের স্টাডিজ। আপনি ১৫ বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকার কাজ করেছেন। এই টাকার মধ্যে যে কত দুর্নীতি হয়েছে তার শেষ নেই। সুতরাং আপনার উন্নয়নের যে ফানুস উড়িয়েছিলেন এই ফানুস ছিল লুটের, আপনি উন্নয়নের যে ঝাড়বাতি দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন তা ছিল টাকা পাচার করা উন্নয়ন।’</p> <p>রুহুল কবীর রিজভীর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন, আতিকুর রহমান, কৃষিবিদ মোকছেদল মোমিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবুল কাশেম, আরিফুর রহমান তুষার, জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহাম্মেদ কচি, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শাহিন সুলতানা বিউটিসহ জেলার নেতৃবৃন্দ। </p> <p>উল্লেখ্য, ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় দিনাজপুর সদর হাসপাতালের সামনে পুলিশের গুলিতে আব্দুর রশিদ গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় চিকিৎসা নিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন আহত আব্দুর রশিদ। এ কারণে ভূমিষ্ঠ শিশুকন্যার ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে এক নিকট আত্মীয়ের কাছে দিয়েছিলেন আব্দুর রশিদের স্ত্রী। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিশুকে মায়েরর কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। </p> <p>এর আগে রুহুল কবীর রিজভী দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচির পাহাড়পুরস্থ বাসভবনে ৫ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত গার্মেন্টকর্মী বাবুর স্ত্রী শারমিনের হাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। নিহত বাবুর বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়।</p>