<p>বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, গাজীপুর ও ঢাকার আশুলিয়ায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের মুখে পোশাকশিল্পে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। এসব এলাকার পোশাকশিল্পের শ্রমিকরা তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ ও বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। ফলে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন। প্রায় অর্ধশত কারখানা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো অর্ধশত কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।</p> <p>গাজীপুর ও ঢাকার আশুলিয়ায় শ্রমিকদের বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের মুখে পোশাকশিল্পে চরম অস্থিরতা বিরাজ করায় আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।<br />  <br /> বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘দেশের পোশাকশিল্পে চলমান অস্থিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষ আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। পোশাকশিল্প দেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় ও একক খাত। এই খাতে অস্থিরতা কোনোভাবেই দেশের অর্থনীতি ও সংশ্লিষ্ট কারোর জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। উপরন্তু আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশসহ আমাদের প্রতিযোগী সব দেশ এই সুযোগে আমাদের পোশাক খাত ধ্বংস করার সুযোগ পাবে এবং পাঁয়তারা চালাবে। ফলশ্রুতিতে আমাদের বাজার দখল করা তাদের জন্য খুবই সহজ হবে এবং এ থেকে তারাই লাভবান হবে।’<br />  <br /> তিনি আরো বলেন, ‘অতীব দুঃখের বিষয় দেশের অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের ন্যায় বেসরকারি এই বৃহৎ শিল্প খাতকেও দলীয় থাবা থেকে বাঁচতে দেয়নি আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার। ফলে গত ১৬ বছর বিজিএমইএ-তে ভোটবিহীন আওয়ামী নেতাদের পুনর্বাসন ও লুটপাটের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা হয়েছে। বিজিএমইএ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন ও মালিক শ্রমিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়কে গুরুত্ব না দিয়ে আওয়ামী মন্ত্রী, এমপি ও নিজেদের ঠিকাদারি সুবিধাপ্রাপ্তিতে ব্যস্ত ছিল। সর্বশেষ বিজিএমইএর সভাপতির পদ দখল করে নিয়েছে ঢাকা মহানগরী উত্তর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি এস এম মান্নান কচি। শোনা যায়, তার নিজের কোনো গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত নেই। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার বিপ্লবী আন্দোলনে মিরপুর ও উত্তরায় ছাত্র-জনতাকে নির্বিচারে হত্যা ও দমনে তার সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল।’</p> <p>চলমান শ্রমিক আন্দোলনে কচি ও তার নিয়োগকৃত বর্তমান বোর্ড এই আন্দোলনের পেছনে কলকাঠি কিংবা ইন্ধনকারী হিসেবে কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই এমপি বলেন, ‘একই সঙ্গে পোশাক খাতে কর্মরত সব শ্রমিক সংগঠনের প্রতি অনুরোধ জানাই- যেসব দুষ্কৃতকারী গোষ্ঠী বা মহল শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনের নাম ব্যবহার করে দেশ ও শিল্প খাতকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে আপনারা তাদের চিহ্নিত করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করুন এবং সব প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করুন।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে- দেশের শিল্প বাঁচলে আমরা বাঁচব এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকবে। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে যার যার অবস্থান থেকে দেশের বৃহৎ রপ্তানি খাত হিসেবে পোশাক খাত এবং এই খাতে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের কর্মসংস্থান রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাই।’</p>