<p>আমেনা রশিদ একজন চাকরিজীবী নারী। তিনি একটি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। চাকরিতে যোগদানের সময় স্বামী প্রথমে তাঁর চাকরি করার ব্যাপারে আপত্তি জানান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বেতনের টাকা সাংসারিক কাজে ব্যয় করার শর্তে তিনি সম্মত হন। প্রশ্ন হলো, আমেনা রশিদের জন্য বেতনের অর্থ সাংসারিক কাজে ব্যয় করা কি আবশ্যক?</p> <p>ফকিহ আলেমরা বলেন, নির্ধারিত শর্তে ইসলাম নারীদের চাকরি করার অনুমতি দেয়। তবে তাঁর উপার্জিত অর্থ স্বাভাবিক অবস্থায় সংসারে ব্যয় করা আবশ্যক নয়। স্বামী এই অর্থ ব্যয়ে স্ত্রীকে জোর প্রয়োগ করতে পারবে না। স্ত্রী, পরিবার ও সন্তানের ব্যয়ভার আল্লাহ পুরুষের জন্য আবশ্যক করেছেন। তবে উল্লিখিত অবস্থায় যেহেতু স্ত্রী সংসারের খরচ বহনের অঙ্গীকার করেছেন, তাই তাঁর জন্য অঙ্গীকার পূরণ করা আবশ্যক। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা প্রতিশ্রুতি পালন করো, নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩৪)</p> <p><strong>স্বামী দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না</strong></p> <p>উল্লিখিত অবস্থায় শর্ত আরোপ করা এবং তাতে সম্মত হওয়ায় স্ত্রীর জন্য সাংসারিক কাজে বেতনের অর্থ ব্যয় করা আবশ্যক। তাই বলে স্বামী তাঁর দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেন না। স্বামীকে দায়িত্ব পালনে যত্নশীল হতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তোমরা নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। কেননা তাদেরকে তোমরা আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর বিধান মোতাবেক তোমরা তাদের লজ্জাস্থানকে নিজেদের জন্য হালাল করেছ। ...তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্বও তোমাদের ওপর। তোমরা তা স্বাভাবিকভাবে আদায় করবে।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৯০৫)</p> <p><strong>সংসারের মূল দায়িত্ব স্বামীর</strong></p> <p>সংসারের ব্যয় নির্বাহের মূল দায়িত্ব স্বামীর বা পুরুষের। ঘরের খরচ বহন করার দায়িত্ব নারীর নয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেমন ঘরে বাস করো, তাদেরকেও তেমন ঘরে বাস করতে দেবে। ...বিত্তবান নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করবে এবং যার জীবনোপকরণ সীমিত সে আল্লাহ যা দান করেছেন তা থেকে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যে সামর্থ্য দিয়েছেন তার চেয়ে গুরুতর বোঝা তিনি তার ওপর চাপান না।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ৬-৭)</p> <p><strong>স্ত্রী স্বামীর প্রতি লক্ষ্য রাখবে</strong></p> <p>কোনো সংসারে যদি স্ত্রী সামর্থ্যবান হন, তবে তাঁর দায়িত্ব স্বামীর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া। যেন সংসারের দায়িত্ব তাঁকে ক্লান্ত করে না দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা যদি খুশিমনে তোমাদেরকে তার কিছু অংশ ছেড়ে দেয় তাহলে তোমরা তা স্বাচ্ছন্দ্যে খেতে পার।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৪)</p> <p>আল্লাহ সবাইকে সুখী দাম্পত্য জীবন দান করুন। আমিন।</p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>