<p>আকস্মিক বন্যায় বৃহত্তর নোয়াখালী, কুমিল্লা ও ফেনীর বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বহু মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছে। বন্যার পানিতে তাদের বাড়ি-ঘর, গবাদি পশু ও ক্ষেতখামার ভেসে গেছে। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে তারা দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করছে। এসব অঞ্চলের অসংখ্য মাদরাসা, মসজিদ ও দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় একজন মুমিন হিসেবে আমাদের কিছু ঈমানি দায়িত্ব রয়েছে। প্রথম দায়িত্ব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খোঁজখবর নেওয়া এবং তাদের ব্যথায় ব্যথিত হওয়া।</p> <p>কেননা মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘পারস্পরিক দয়া, ভালোবাসা ও সহানুভূতি প্রদর্শনে তুমি মুমিনদের একটি দেহের মতো দেখবে।যখন শরীরের একটি অঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয়, তখন শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রাত জাগে এবং জ্বরে অংশ নেয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬০১১)</p> <p>মুমিন হিসেবে আমাদের দ্বিতীয় দায়িত্ব সাধ্য অনুসারে অসহায় ও দুস্থ মানুষকে সাহায্য করা। মুমিন কখনো মুমিনের বিপদ থেকে নিশ্চুপ থাকতে পারে না। রাসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কাজেই সে তার ওপর নির্যাতন করবে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায়ও ছেড়ে যাবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন মেটাবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন মেটাবেন। একইভাবে যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৪৮৯৩)</p> <p>আমরা যদি মানুষের কল্যাণে কাজ করি, তবে আল্লাহই আমাদের সহায় হবেন। কেননা হাদিসে এসেছে, ‘যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে, আল্লাহ তাআলাও তার কল্যাণে রত থাকবেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬৭৪৬)</p> <p>আল হামদুলিল্লাহ! ঈমানি তাগিদ থেকে বহুসংখ্যক মানুষ বন্যার্ত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। আমি জেনে অত্যন্ত খুশি হয়েছি যে উলামায়ে কেরাম বিপদগ্রস্ত মানুষের সহযোগিতা, তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। মাদরাসাগুলোতে ঘরহারা মানুষের আশ্রয় মিলেছে। আল্লাহ সবার নেক কাজগুলো কবুল করে নেন এবং আরো বেশি নেক কাজ করার তাওফিক দিন। আমিন</p> <p>দ্বিনি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশ ও জাতির অনেক বড় সম্পদ এবং উলামায়ে কেরাম মানুষের জন্য আল্লাহর রহমতস্বরূপ। বন্যাপ্লাবিত অঞ্চলে মাদরাসা, মসজিদ এবং তাতে কর্মরত আলেমরা ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন। তাঁদের প্রতি লক্ষ্য রাখাও জরুরি মনে করছি। সেই আত্মমর্যাদাশীল আলেমদের বিশেষভাবে সহযোগিতা করা প্রয়োজন, যাঁরা বিপদগ্রস্ত হলেও আত্মমর্যাদার কারণে কখনো কারো দ্বারস্থ হবেন না।</p> <p>আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘এটা প্রাপ্য অভাবগ্রস্ত লোকদের, যারা আল্লাহর পথে এমনভাবে নিয়োজিত (ব্যস্ত) যে দেশময় ঘোরাফেরা করতে পারে না। না চাওয়ার কারণে অজ্ঞ লোকেরা তাদের অভাবমুক্ত বলে মনে করে। তুমি তাদের লক্ষণ দেখে চিনতে পারবে। তারা মানুষের কাছে নাছোড় হয়ে চায় না। যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় করো আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭৩)</p> <p>আল্লাহ সবাইকে বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করুন। আমিন</p>