<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাকরি হারানোর শঙ্কায় ভুগছেন পোশাককর্মী ইয়াসমিন লাবনী। মাস শেষে বেতন না পেলে দুই শিশুসন্তানকে খাওয়াতে পারবেন না</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই ভয়ে দিন-রাত পার করছেন। আরেক কর্মী মো. আলম মিয়ার আশঙ্কা, বেতন না পেলে চিকিৎসা খরচ মেটানো সম্ভব হবে না। কাপড় কেনার মতো অর্থও থাকবে না। অর্থাভাবে প্রয়োজন মেটাতে না পারার এই শঙ্কা শুধু লাবনী বা আলম মিয়ার নয়, ফ্যাক্টরিতে কর্মরত তিন হাজার কর্মী একই শঙ্কায় ভুগছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটুকু পড়ে মনে হতে পারে, বেতন না দিয়ে মালিকপক্ষই অমানবিক আচরণ করছে। কিন্তু বিষয়টি আদতে তা নয়। পদ্মা শাতিল আরব ফ্যাশনস ফ্যাক্টরি লিমিটেডের পাওনা বাকি ২৫ লাখ ডলার বা ২৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। তারা এই অর্থ পাবে অস্ট্রেলিয়ার মোজেইক ব্র্যান্ডসের কাছে। এত দিন পর্যন্ত মোজেইক ব্র্যান্ডসের অধীন ছিল ৯টি ফ্যাশন ব্র্যান্ড। গত সেপ্টেম্বরে পাঁচটি ব্র্যান্ড বন্ধ কারার ঘোষণা দেয় তারা। পুনর্গঠন কার্যক্রমের কথা বলে রকম্যানস, অটোগ্রাফ, ক্রসরোডস, ডাবলিউডটলেন ও বিমি ব্র্যান্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়। এগুলোর পরিবর্তে মিলার্স, নোনি বি, রিভার্সস ও ক্যাটিস ব্র্যান্ডে বিনিয়োগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় মোজেইক।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে কম্পানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিকা বার্চটোল্ড বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূল ব্র্যান্ডগুলো নিয়েই আমরা পরিকল্পনা সাজাতে চাই। এই ব্র্যান্ডগুলো ঘিরে শহুরে ও আঞ্চলিক জনগোষ্ঠীর ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়াতে মনোযোগী হয়েছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মোজেইক ব্র্যান্ডসের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের ২৩টি পোশাক কারখানা বিপদে পড়েছে। সব ফ্যাক্টরি মিলিয়ে মোজেইক ব্র্যান্ডসের দেনার পরিমাণ ৩০ মিলিয়ন ডলার বা তিন কোটি ডলার। অস্ট্রেলিয়ান ব্র্যান্ডটির দাবি, তারা দেউলিয়া হওয়ার পথে রয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে পদ্মা শাতিল আরব ফ্যাশনস ফ্যাক্টরির পরিচালক জাবেদ আহমেদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত জুন থেকেই দেনা পরিশোধের অনুরোধ জানিয়ে আসছি। তারা বলেছে, পোশাকের বিক্রি কমে গেছে। যদিও পোশাকের সরবরাহ ঠিক রাখতে বলে তারা। দ্রুতই বাকি রাখা অর্থ পরিশোধ করবে বলেও জানায় মোজেইক ব্র্যান্ডস। গাজীপুরের সাততলা কারখানাটিতে এখনো রকম্যানস, রিভার্সস ও মিলার্সের কার্টন স্তূপ হয়ে আছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের বাইরে চীন ও ভারতের অনেক পোশাক কারখানাও মোজেইক ব্র্যান্ডসের কাছে অর্থ পায়। মোট দেনার পরিমাণ আসলে কত তা জানতে পূর্ণাঙ্গ অডিট (হিসাব নিরীক্ষা) সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে মোজেইক ব্র্যান্ডসের কাছে পোশাক সরবরাহ করা কম্পানিগুলো।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পোশাক সরবরাহকারী কম্পানিগুলোর সঙ্গে মোজেইকের বৈঠক করার কথা। সেখানে সম্পদ বিক্রি এবং ব্যবসা পুনর্গঠনের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধের ব্যাপারে পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে তারা। তবে বিদেশি পাওনাদারদের অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়া কী হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনো কাটেনি। পোশাক সরবরাহকারী কম্পানিগুলোর দাবি, আক্রমণাত্মক ব্যাবসায়িক কৌশলই মোজেইকের ভরাডুবির কারণ। তৈরি পোশাক কারখানা হাইড্রোঅক্সাইড নিটওয়্যারের মালিক ওমর চৌধুরী বলেন, মোজেইকের চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ দেন তিনি। ১২০ দিন পেরিয়ে গেলেও অর্থ অপরিশোধ করেনি অস্ট্রেলিয়ান কম্পানিটি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড প্রতারণার মধ্যে পড়ে বলে মন্তব্য করেন ওমর চৌধুরী।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুলতানা সোয়েটার্সের ম্যানেজার সারওয়ার হোসেইন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফ্যাক্টরি চালাতে গেলে মালিকপক্ষকে শুধু বেতন নয়, কাঁচামাল, বিদ্যুৎ, পরিবহন ইত্যাদি নিয়েও ভাবতে হয়। অর্থাভাবে থাকা কারখানাগুলোকে ব্যাংকও আর ঋণ দিতে চাচ্ছে না। মোজাইকের কাছে সুলতানা সোয়েটার্সের পাওনা রয়েছে ১০ লাখ ডলার। কারখানা এই অর্থ না পাওয়ায় তার বেতনও আটকে গেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, করোনা মহামারি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের পোশাক খাত অনেক আগে থেকেই ভুগছে। তার ওপর পাওনা অর্থ না দিয়ে মোজেইক খুব বাজে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তাদের এই কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের বক্তব্য হলো, আইনি সহায়তা নিয়ে এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এমন দায়সারা জবাব দিয়ে অস্ট্রেলিয়া আসলে নিজেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।</span></span></span></span></p>