<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে নিলামযোগ্য কনটেইনার পড়ে আছে প্রায় আট হাজার টিইইউএস (২০ ফিট দৈর্ঘ্যের কনটেইনারের একক)। এসব কনটেইনার নিলামে বিক্রি ও ধ্বংসযোগ্য কনটেইনারগুলো ধ্বংস করে বন্দরের মূল্যবান জায়গা খালি করার জন্য একাধিকবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বরাবর চিঠি দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর মধ্যে ৪২ টিইইউএস কনটেইনারে থাকা পেঁয়াজ, কমলা, মাল্টা, ম্যান্ডারিন, আদা, ড্রাগন ফল পচে যাওয়ায় ধ্বংস করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। ফলে এখন বন্দরের ৪২ টিইইউএস জায়গা খালি হয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছরের জুলাই ও আগস্টে চট্টগ্রাম বন্দরে তৈরি হওয়া কনটেইনার জট কমতে শুরু করেছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যের কনটেইনার নামার পর দেশে পণ্যের দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা, মামলা, মিথ্যা ঘোষণায় চালান আটক, কম্পানি দেউলিয়া হওয়াসহ নানা কারণে খালাস নেন না অনেক আমদানিকারক। নির্দিষ্ট সময় পর বন্দর কর্তৃপক্ষ এসব কনটেইনারের তালিকা কাস্টম হাউসকে পাঠায়। যাতে সেগুলো নিলাম বা ধ্বংস করে বন্দরের জায়গা খালি করা যায়। কিন্তু জনবল সংকট, নিলাম প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা, নানা জটিলতার কারণে নিলাম ও ধ্বংস কার্যক্রম পরিচালনায় দেরি হয়। এতে একদিকে ডলারে আমদানি করা এসব পণ্যের গুণগতমান নষ্ট, মেয়াদোত্তীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অন্যদিকে শিপিং এজেন্টগুলোর কনটেইনার বছরের পর বছর আটকে থাকে। বন্দর ও কাস্টম ফি ও শুল্ক থেকে বঞ্চিত হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম কাস্টম সূত্রে জানা যায়, গত ১১ নভেম্বর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সম্মেলনকক্ষে পণ্য ধ্বংসে নিয়োজিত কমিটির সভায় ৪২ টিইইউএস কনটেইনারের পচা পণ্য ধ্বংসের সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ড্রাম ট্রাকে কনটেইনারের পণ্য বোঝাই করে নগরীর দক্ষিণ হালিশহরে সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং ইয়ার্ডে এনে ধ্বংস করা হয়েছে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া পচে যাওয়া ফল, আদা ও পেঁয়াজ ধ্বংস কার্যক্রম শুরু হয়। এই ধ্বংস কার্যক্রম চলে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। চার দিনে তিন আমদানিকারকের ৮১ হাজার ১৫০ কেজি আদা, এক আমদানিকারকের ২৫ হাজার ২০০ কেজি পেঁয়াজ, চার আমদানিকারকের এক লাখ ৩৩ হাজার ৫৪০ কেজি কমলা, পাঁচ আমদানিকারকের দুই লাখ ৭৮ হাজার ১০৭ কেজি ম্যান্ডারিন ফল ও এক আমদানিকারকের ১৮ হাজার ৯০০ কেজি ড্রাগন ফল ধ্বংস করা হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিলাম শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মো. সেলিম রেজা কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে এসব পণ্য এলেও দীর্ঘদিন ধরে খালাস করেননি আমদানিকারকরা। পরে চট্টগ্রাম কাস্টম কর্তৃপক্ষ কয়েকবার নিলামে তুলেও সেগুলোর ন্যায্যমূল্য পাওয়া না যাওয়ায় বিক্রি করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত পচে যাওয়া ওই সব পণ্য ধ্বংস করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমের নিলাম শাখা। ১৮ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর চার দিনে পচে যাওয়া ৪২ টিইইউএস কনটেইনার ফলমূল, আদা ও পেঁয়াজ নিয়ম মেনেই সফলভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে আগস্টের শুরু পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ড থেকে প্রতিদিন কনটেইনার ডেলিভারি ও স্থানান্তর মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছিল। এরপর আগস্টের শেষের দিকে বন্যার কারণে সপ্তাহব্যাপী যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এর ফলে বন্দরে একসময় প্রায় ৪৫ হাজার টিইইউএস কনটেইনার স্তূপ জমে যায়, যা বন্দরের ইয়ার্ডের মোট ধারণক্ষমতার ৮৫ শতাংশ জায়গা পর্যন্ত পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি বন্দরে কনটেইনারের সংখ্যা ৩৪ হাজার টিইইউএসে নেমে এসেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ধারাবাহিক ও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে কনটেইনার জট নিরসন করতে পেরেছি। এ ছাড়া পুরনো কনটেইনার নিলামে বিক্রি করে ইয়ার্ডের জায়গা খালি করার উদ্যোগ নিয়েছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ও সচিব মো. ওমর ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, বন্দরের ইয়ার্ডে প্রায় আট হাজার নিলামযোগ্য কনটেইনার পড়ে আছে। এর মধ্যে তিন শর বেশি কনটেইনার বিপজ্জনক। এগুলোতে দাহ্য পদার্থ আছে, যা দ্রুত ধ্বংস করা উচিত। এসব বিপজ্জনক কনটেইনারের কারণে বাড়তি নিরাপত্তা নিতে হচ্ছে। ইয়ার্ডের বড় অংশজুড়ে নিলামের কনটেইনার পড়ে থাকায় নতুন কনটেইনার সংরক্ষণও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই জট নিরসনে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও এনবিআরে চিঠি দেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></p>