<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ঋণখেলাপির দায়ে অ্যাননটেক্স গ্রুপের মালিকানাধীন গোল্ডেন জুট মিলটি দেউলিয়া হয়ে নিলামে উঠেছে। পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে টেন্ডার আহবান করে জনতা ব্যাংকের ঢাকা করপোরেট শাখা। গত শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখায় টেন্ডার জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিলাম বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৫৫ কোটি ছয় লাখ দুই হাজার ৯৬৮ টাকা। অভিযোগ উঠেছে, ব্যাংকের টাকা লুটপাট করার পর মিলটিকে দেউলিয়া করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। এদিকে গোল্ডেন জুট মিলের লোন সম্পর্কে ফরিদপুর বা বোয়ালমারীর স্থানীয় জনতা ব্যাংকের শাখায় কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেউলিয়া হওয়া জুট মিলের সরেজিমন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তৎকালীন জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাতের শ্বশুরবাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌর সদরের ছোলনা গ্রামে। চেয়ারম্যানের সঙ্গে অ্যাননটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনুস বাদলের সুসম্পর্ক থাকায় জনতা ব্যাংক করপোরেট শাখা ঢাকা থেকে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়। ড. আবুল বারকাতের স্ত্রী শাহিদা পারভিনের বড় ভাই মিজানুর রহমান। মিলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। আর মিজানুর রহমানের বড় ছেলে মহসিন হোসেন ওরফে গুড্ডু ছিলেন পরিচালক হিসেবে। এখন গোল্ডেন জুট মিলের পাশে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বোনানজা জুট মিল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> স্থাপন করে সেটি পরিচালনা করছেন দেউলিয়া হওয়া মিলের কর্মকর্তারাই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, জেলার বোয়ালমারী পৌরসভার শেষ প্রান্তে কলারন এলাকায় ২০১০ সালে প্রায় ১৬ একর জমির ওপর </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এম এইচ গোল্ডেন জুট মিল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১২ সালে মিলটিতে উৎপাদন শুরু হয়। তৎকালীন জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আবুল বারকাতের শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকলেও মিলটির মালিকানা ঢাকার টঙ্গীর অ্যাননটেক্স গ্রুপের। গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনুস বাদলের নামে জনতা ব্যাংক করপোরেট শাখা ঢাকা থেকে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়। নাম প্রকাশ না করতে ইচ্ছুক এম এইচ গোল্ডন জুট মিলের একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেন, লুটপাট করার উদ্দেশ্যেই মিলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। মিলের সব যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে নতুন আরেকটি মিল করা হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে বোনানজা জুট মিল। গোল্ডেন জুট মিলের নামে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পর সুদে-আসলে যা সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। উৎপাদনের শুরুতে মিলটি লাভবান থাকলেও ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করা হয়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ব্যাপারে জনতা ব্যাংক বোয়ালমারী শাখার ব্যবস্থাপক প্রিন্সিপাল অফিসার নীলাদ্রি ঘোষ বলেন, গোল্ডেন জুট মিলটির নামে ঋণ মঞ্জুর করা হয় ঢাকার জনতা ব্যাংক ভবনের করপোরেট শাখা থেকে। এই কার্যক্রমের কোনো কিছুই আমরা জানি না। মিলটি সম্পর্কে বোয়ালমারী শাখায় কোনো তথ্যও নেই।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গোল্ডেন জুট মিলের প্রশাসন বিভাগের ম্যানেজার সৈয়দ আব্দুল মান্নান জানান, গোল্ডেন জুট মিল অ্যাননটেক্স গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। অ্যাননটেক্স গ্রুপের নামে ঋণ নেওয়া হয়। নরসিংদীর ইউনুস বাদল, ইউসুফ বাদল অ্যাননটেক্স গ্রুপের মালিক। তাঁরা ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না করায় জুট মিলটি ঋণখেলাপি হয়। তিনি বলেন, জুট মিল প্রতিনিয়ত লস দিয়ে যাচ্ছে। কোনো মিলই বর্তমানে লাভে নেই বলে তিনি দাবি করেন। লস হওয়ার কারণেই হয়তো ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করতে পারেনি মিলটি। গোল্ডেন জুট মিলের যন্ত্রপাতি খুলে বোনানজা মিলে লাগানোর বিষয়টি অস্বীকার করে আব্দুল মান্নান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটি আমাদের সম্পদ। এটি কোনো সরকারি সম্পদ নয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেউলিয়া হয়ে নিলামে ওঠা গোল্ডেন জুট মিলটির সরেজমিনে খোঁজখবর নিতে গিয়ে দেখা যায়, মিলটির পরিচালনাকারী সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন পাশে নতুন প্রতিষ্ঠিত হওয়া বোনানজা জুট মিলে বসেন। বিষয়টি নিয়ে জুট মিলের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গোল্ডেন জুট মিলে আমরা সবাই চাকরি করতাম। মিলটি খেলাপি হয়ে যাওয়ায় আমরা সেটি ছেড়ে দিয়েছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলের পরিচালক ও বর্তমান বোনানজা জুট মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মহসিন হোসেন গুড্ডুর সঙ্গে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। এমনকি ফোনে খুদে বার্তা দিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি তাঁর।</span></span></span></span></p>