<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), ৫জি ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মতো প্রযুক্তিতে চীনা কম্পানিগুলোর ক্রম অগ্রযাত্রাকে স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। তাই এই অগ্রগতি থামাতে হুয়াওয়েসহ চীনা প্রযুক্তি কম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার পথে হেঁটেছে দেশটি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ যে নীতিমালা প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে, চীনের এআই, সেমিকন্ডাক্টর ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো মার্কিন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লেনদেন করতে পারবে না। এর চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করতে হলেও অনুমতি নিতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞা ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৭ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চীনের বিভিন্ন পণ্যে আমদানিতে শুল্ক আরোপ করে যে বাণিজ্যযুদ্ধের সূত্রপাত করেন, সেই যুদ্ধ বাণিজ্যের পাশাপাশি প্রযুক্তি খাতেও ছড়িয়ে পড়েছে, যা অব্যাহত রেখেছেন জো বাইডেন। ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এই লড়াই যে বেগবান হবে তাতে সন্দেহ নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রযুক্তির লড়াইয়ে চীন কিভাবে জবাব দিচ্ছে এ নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্লভ খনিজ পদার্থ রপ্তানিতে বিধি-নিষেধ আরোপ এবং পরিশোধনক্ষেত্র রাষ্ট্রীয় কম্পানি দিয়ে কিনে নেওয়ার মাধ্যমে এ খাতে নিজের নিয়ন্ত্রণ আরো শক্তিশালী করছে চীন। তাদের এই তৎপরতা স্পষ্ট করে দুর্লভ এসব খনিজ পদার্থের ওপর দেশটি একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বিদেশি যেসব প্রযুক্তি কম্পানি চীনের এসব পণ্যের ওপর নির্ভরশীল, তাদের আমদানিতে বাধা তৈরি করা হচ্ছে; একই সঙ্গে এসব পণ্যের দামও বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্লভ খনিজ পদার্থের ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে চীন গত ১ অক্টোবর থেকে নতুন নির্দেশনা কার্যকর করেছে। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী এখন কোনো রপ্তানিকারকের দুর্লভ খনিজ পদার্থ রপ্তানি করতে হলে তাদের এই পণ্য কোন দেশে যাচ্ছে, কিভাবে যাচ্ছে এবং কিসে ব্যবহার করা হবে এসব বিস্তারিত তথ্য দাখিল করা লাগে। নতুন এই নীতিতে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, এসব খনিজ সম্পদের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ আরো মজবুত হয়েছে। এর ফলে চীনের বাইরে, বিশেষত সেমিকন্ডাক্টর ও প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট কম্পানিগুলো সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ বিশ্ববাজারে সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে প্রয়োজনীয় দুর্লভ দুটি খনিজ পদার্থ গ্যালিয়ম ও জার্মেইনিয়াম প্রায় পুরোটাই রপ্তানি করে চীন। তাদের এই বিধি-নিষেধের আওতায় আরেক খনিজ উপাদান অ্যান্টিমনিও (খাদ) পড়েছে। এটিও সেমিকন্ডাক্টর ও সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমনকি চীন বর্তমানে দুর্লভ খনিজ পদার্থ খনি থেকে উত্তোলন ও এর পরিশোধনপ্রক্রিয়ার তথ্য রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা হিসেবে বিবেচনা করে। সাম্প্রতিক শিল্পসংশ্লিষ্ট ডাটা ফাঁস করার জন্য দুজন ব্যবস্থাপককে কয়েক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে চীন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিয়ন্ত্রণের ধারাবাহিকতায় চীন বিদেশি মালিকানাধীন খনিজ পদার্থ শোধনাগারগুলোকে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের আয়ত্তে নিয়ে আসছে, যা তাদের আগের কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কানাডার প্রতিষ্ঠান নিও পারফরম্যান্স ম্যাটেরিয়ালস সর্বশেষ বিদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের শোধনাগারের ৮৬ শতাংশ শেয়ার চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সেংহে রিসোর্সেসের কাছে বিক্রি করতে সম্মত হয়েছে। এই ক্রয় ডিসপ্রোসিয়ামের মতো উপকরণের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণকে সুসংহত করবে, যা চিপ ক্যাপাসিটার তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। চীন বিশ্বের ডিসপ্রোসিয়ামের ৯৯.৯ শতাংশ উৎপাদন করে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চীনের বিরল খনিজ পদার্থের ওপর নির্ভরতার কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। কারণ এসব উপকরণ উচ্চপ্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। বিশেষত সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতেও। এ অবস্থায় কিছু দেশ এসব পণ্যের উৎস পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। অস্ট্রেলিয়া ও বেলজিয়াম খনিজ পদার্থের পরিশোধনাগার তৈরিতে বিনিয়োগ করছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়া নতুন প্রকল্পও করছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাধা হচ্ছে বিপুল খরচ, নিয়ন্ত্রণগত সমস্যা এবং দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্লভ খনিজ পদার্থে চীনের আধিপত্যের একটি বড় কারণ এসব পণ্য উৎপাদন ও পরিশোধনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষতা তাদের আছে। ফলে তারা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক কম খরচে উচ্চমানের পণ্য তৈরি করতে পারে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বের দুর্লভ খনিজ পদার্থের ৯৫ শতাংশের বেশি উৎপাদন করে চীন। এসব পদার্থের মোট ১৭ উপাদান রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের এসব পণ্য আমদানির ৮০ শতাংশই চীনের ওপর নির্ভর করে। অনেক সামরিক অস্ত্র তৈরিতে এসব উপাদান ব্যবহৃত হয়। সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস, টমস হার্ডওয়্যার, সিএনএন বিজনেস</span></span></span></span></p>