<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে বাড়তে থাকে পোড়া রোগীর সংখ্যা। ঠাণ্ডার তীব্রতার সঙ্গে বাড়ে অগ্নিদুর্ঘটনা। উষ্ণতার আশায় শুরু হয় গরম পানি ব্যবহার, খড় ও শুকনো পাতায় আগুন ধরিয়ে বা মাটির চুলায় গরম ছাই রেখে তাপ পোহানো। এমনকি গরম করে সেঁক নেওয়া থেকেও ঘটে পুড়ে যাওয়ার ঘটনা। গ্রামাঞ্চলে যেখানে শীতের তীব্রতা বেশি সেখানে এ ধরনের দুর্ঘটনার প্রকোপও বেশি দেখা যায়।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অগ্নিদুর্ঘটনার শিকার হন যারা</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিশুরাই সবচেয়ে বেশি আগুনে পোড়ার শিকার হয়ে থাকে। বয়স্ক পুরুষ বা মহিলাদের মধ্যেও পোড়া রোগীর সংখ্যা প্রচুর। গ্রামাঞ্চলে সদ্য প্রসূতি মায়েদের মধ্যেও আক্রান্তের হার বেশি। শিশুদের দৌড়ঝাঁপ, কিংবা তার দেখাশোনা করা ব্যক্তির অসতর্কতায় পোড়ার ঘটনা বেশি ঘটে। বয়স্ক পুরুষ ও মহিলারা এবং প্রসূতি মায়েদের ক্ষেত্রে তাপ পোহাতে গিয়ে কাপড়ে আগুন লাগার ঘটনা বেশি দেখা যায়। গরম তরল পদার্থে পোড়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে, এর পরই আছে ছাই ও সরাসরি আঁচে পুড়ে যওয়ার ঘটনা।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রাথমিক চিকিৎসা</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাপড়ে আগুন লাগলে আতঙ্কিত হবেন না। ছোটাছুটিতে বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে আগুন আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। আগুন নেভানোর জন্য মাটিতে শুয়ে গড়াগড়ি করুন। আশপাশে কেউ থাকলে মোটা কাপড় বা চাদর দিয়ে ঢেকে জাপটে ধরেও আগুন নেভাতে বলুন। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে দ্রুত পুড়ে যাওয়া জামা খুলে ফেলতে হবে এবং স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পোড়া স্থানে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ঢালতে হবে। কোনোভাবেই আক্রান্ত স্থানে বরফ, ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি, ডিমের সাদা অংশ, টুথ পেস্ট, চুন ইত্যাদি লাগানো যাবে না। বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে পানি ঢালার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যাতে ঠাণ্ডা লেগে না যায়। পানি ঢালা শেষে চাদর বা কম্বল দিয়ে গা ঢেকে দিতে হবে, যাতে শরীর অতিরিক্ত ঠাণ্ডা না হয়। হাতের কাছে অ্যান্টিসেপটিক ওয়েন্টমেন্ট থাকলে সেটি পোড়া ক্ষতে লাগানো যেতে পারে। দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। পোড়ার পরিমাণ যত কমই হোক, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সেকেন্ড বা থার্ড ডিগ্রি বার্ন খালি চোখে দেখে বোঝা কঠিন, ডাক্তারের পরামর্শ নিতে দেরি করলে তা দ্রুত সংক্রমিত হয়ে পড়তে পারে। তাই কখনোই হেলাফেলা করা উচিত নয়।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিরোধে করণীয়</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের দেশে পোড়া রোগীর চিকিৎসায় প্রশিক্ষিত ডাক্তার ও অন্যান্য জনবল প্রয়োজনের তূলনায় অপ্রতুল। পোড়ার চিকিৎসাও দীর্ঘমেয়াদি, খরচও অনেক। অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধই শ্রেষ্ঠ সমাধান। শীতকালে অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে বাড়তি কিছু সতর্কতা নিতে হবে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">n </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়, তাই আগুন বা উত্তপ্ত জিনিস থেকে তাদের দূরে রাখতে হবে। শিশুদের নিয়ে রান্নাঘরে যাওয়া যাবে না। গরম জিনিসপত্র রাখতে হবে নাগালের বাইরে। বিশেষ করে বড়রা চা, কফি পানের সময় শিশুদের নিরাপদে রাখতে হবে। অসাবধানতায় গরম চা, কফি পড়ে শিশুদের পোড়ার ঘটনা নৈমিত্তিক।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">n </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দিয়াশলাই, লাইটার, গ্যাস সিলিন্ডার বা কেরোসিন শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">n </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গোসলের গরম পানি পাতিলে বা ছোট পাত্রে নেওয়ার চেয়ে সরাসরি বালতি বা হাতলযুক্ত বড় পাত্রে পরিবহন করুন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">n </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাটির চুলায় রান্নার পর ছাই ভালোমতো পানি দিয়ে নিভিয়ে রাখতে হবে। চুলা ঢেকে রাখা উত্তম।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">n </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খোলা যায়গায় আগুন জ্বালিয়ে তাপ পোহাবেন না। পোহাতে যদি হয়, যত দ্রুত সম্ভব সেটি পানি ঢেলে নেভাতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">n </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চুলায় আগুন জ্বালিয়ে কাপড় শুকানো বিপজ্জনক।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">n </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গরম সেঁকের সময় শুরুতে তাপমাত্রা নিশ্চিত হয়ে নিন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">n </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খালি হাতে গরম কিছু ধরবেন না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">n </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বালানোর আগে ঘরের জানালা খুলে দিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন, যাতে জমে থাকা গ্যাস বেরিয়ে যায়।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল</span></span></span></span></p>